• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অনলাইনে ভুয়া খবর প্রকাশে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৮:১৪

অনলাইনে ভুয়া খবর প্রকাশের জন্য বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছর বিশ্বের ১৮টি দেশে এবিষয়ে জরিপ চালানো হয়।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৯ শতাংশ বলছেন, ইন্টারনেটে কোনটা ভুয়া খবর আর কোনটা সত্যি তা নিয়ে তারা সংশয়ে রয়েছেন।

তবে উদ্বেগ থাকলেও জরিপের বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী ইন্টারনেটের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন।

এর মধ্যে ১৬টি দেশের বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারী ভুয়া খবর ঠেকাতে গিয়ে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আনার বিরোধিতা করেছেন। তবে চীন ও যুক্তরাজ্যে জরিপের বেশিরভাগ বলেছেন, তারা ইন্টারনেটে সরকারি নিয়ন্ত্রণের পক্ষে।

২০১০ সালেও একই রকম জরিপ করেছিল বিবিসি। এবারের ১৮টির মধ্যে ১৫টি দেশ আগেরবারের জরিপেও ছিল।

এবারের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৮ শতাংশ বলছেন, ইন্টারনেটের ওপর কখনই কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ আনা উচিত না। আগের জরিপে এ মত দিয়েছিলেন ৫১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।

কিন্তু চীনে ৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা ইন্টারনেটকে নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনার ধারণা সমর্থন করেছেন। আর যুক্তরাজ্যে এই মত দিয়েছেন ৫৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।

যেসব দেশে নিয়ন্ত্রণ আনার বিষয়ে ব্যাপক বিরোধিতা এসেছে তাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে গ্রিস। সেখানে ৮৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ইন্টারনেটে নিয়ন্ত্রণ আনার বিরোধিতা করেছেন। নাইজেরিয়ায় এই মত দিয়েছেন ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল সময়ে গ্লোবস্ক্যানের সহযোগিতায় ১৬ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর এ জরিপ চালায় বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস।

জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, কোনটি ভুয়া খবর আর কোনটি সত্য- সেই অস্পষ্টতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ব্রাজিলীয়রা। দেশটির উত্তরদাতাদের ৯২ শতাংশ এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উন্নয়নশীল দেশে ব্যাপক মাত্রায় ভুয়া খবর চিহ্নিত করা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। যার মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৯০ শতাংশ, নাইজেরিয়ায় ৮৮ শতাংশ এবং কেনিয়ায় ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা উদ্বেগের কথা বলেছেন।

কেবল জার্মানিতেই সবচেয়ে কম ৫১ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা এ নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন। দেশটিতে নির্বাচনকালীন সময়ে ‘ভুয়া খবর’ খুঁজে বের করে সরিয়ে দিতে সরকারের দৃঢ় প্রচেষ্টাও দেখা যায়।

গ্লোবস্ক্যান চেয়ারম্যান ডগ মিলার বলেন, ‘২০১৩ সালে অ্যাডওয়ার্ড স্নোডেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) নজরদারির তথ্য ফাঁস করায় অনলাইনে মতামত প্রকাশে মানুষের আস্থা যেমন কমে গিয়েছিল, তেমনি ‘ভুয়া খবরের’ এই যুগ ইন্টারনেট তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কমাতে তাৎপর্যপূর্ণ হতে উঠতে পারে বলে জরিপে উঠে এসেছে।’

অনলাইনে মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রেও মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে। যে ১৫টি দেশে দুইবারই বিবিসি জরিপ করেছে তাতে দেখা যায়, মত প্রকাশে নিরাপদ বোধ করেন না এমন উত্তরদাতার সংখ্যা ৪৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৩ শতাংশ হয়েছে।

ইন্টারনেটে ভুয়া খবর ও সত্য খবর নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন?

তবে এ বিষয়ে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর মানুষের মনোভাবে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যও উঠে এসেছে জরিপে।

নাইজেরিয়া, পেরু ও চীনের বড় একটা অংশ অনলাইনে মত প্রকাশে যতটা আত্মবিশ্বাসী, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় অনলাইন মত প্রকাশে তার চেয়েও বেশি উদ্বেগ দেখা যায়। ফরাসি ও গ্রিকরা অনলাইনে মন খুলে মত প্রকাশ করতে সবচেয়ে কম আগ্রহী।

ইন্টারনেটের প্রতি নারী ও পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যের বিষয়টিও জরিপে এসেছে। এখন পর্যন্ত পুরুষরা ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশি স্বচ্ছন্দ্য। গত ছয় মাস ধরে অনলাইনে ছিলেন এমন পুরুষের সংখ্যা যেখানে ৭৮ শতাংশ, নারীদের সংখ্যা সেখান ৭১ শতাংশ।

অনলাইনে মত প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি অনিরাপদ বোধ করেন। উন্নত দেশগুলোতেই নারীদের এই উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। ফ্রান্সে মাত্র ১৪ শতাংশ নারী অনলাইন মত প্রকাশে নিরাপদ বোধ করেন। আর যুক্তরাজ্যে এই হার মাত্র ৩৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ শতাংশ।

ব্রিটিশ পুরুষদের চেয়ে নারীরা ইন্টারনেটের ভুয়া কনটেন্ট নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। সেখানে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণও তারাই বেশি দেখতে চান।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিঘ্ন হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা
নেট ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ
২০ বছরে সিসিমপুর
ইন্টারনেটে শিশুদের নিরাপদ থাকতে শেখাবে সিসিমপুর
X
Fresh