জেট দেখিয়ে মেসিকে কিনতে চেয়েছিল রিয়াল!
ক্যাম্প ন্যু থেকেই ক্যারিয়ার শুরু। এখানেই হয়তো শেষ হবে আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকরের ক্যারিয়ার। বর্তমানে লিওনেল মেসি আর বার্সেলোনা ‘একই বৃন্তে দুটি কুসুম’ হয়ে থেকে গেলেও বাকি দলগুলো ক্যাম্প ন্যু থেকে সেই আর্জেন্টাইন ‘কুসুম’ ছেঁড়ার কম চেষ্টা করেনি। এ নিয়ে পিএসজি, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি কিংবা ইন্টার মিলানকে ঘিরে রব উঠেছে ইউরোপের ফুটবল বাজারে। তবু জার্মানির প্রভাবশালী সাপ্তাহিক সাময়িকী ‘ডার স্পিয়েগেল’-এর দাবি শুনে চমকে উঠতে হলো। সাময়িকীর দাবি, পাঁচ বছর আগে রিয়াল মাদ্রিদ মেসিকে কেনার চেষ্টা করেছিল!
ইউরোপের কয়েকটি দেশের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম মিলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার স্বার্থে ২০১৫ সালে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টিগেটিভ কলাবোরেশনস (ইআইসি) গঠন করেছিল। তারই অংশ হিসেবেই ‘ফুটবল লিকস’ ওয়েবসাইটের তথ্য-প্রমাণাদির ওপর ভিত্তি করে মেসিকে নিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে ‘ডার স্পিয়েগেল’—তাদের দাবি, গ্যারেথ বেলকে কেনার আগে রিয়াল নাকি মেসির পেছনে ঘুরেছে!
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ
--------------------------------------------------------
২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর গ্যারেথ বেলের সঙ্গে চুক্তি করে ফুটবল দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল মূলত চুক্তির অঙ্কটা। ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম থেকে এই ওয়েলস উইঙ্গারকে রিয়াল দলে ভেড়ায় তৎকালীন রেকর্ড ১০০ মিলিয়ন ইউরোয়! বেলের মতো একজন খেলোয়াড়কে এতো টাকায় কেনায় ভ্রু কুচকে ছিলেন অনেকেই। কেউ কেউ তো এমনও বলে ফেলেন, এটা স্রেফ টাকার অব্যহার! কেনো বেলের মতো একজনকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর চেয়েও বেশি দামে কিনেছিল রিয়াল?
কারণটা জানা গেলো এবার। বেলকে রিয়াল এতো চড়া দামে কিনেছিল আসলে লিওনেল মেসিকে কিনতে না পারার ক্ষোভ থেকে! বেলকে কেনার কয়েক মাস আগেই নাকি মেসিকে কিনতে চেয়েছিল রিয়াল। তখন মেসির উপর ২৫০ মিলিয়ন ইউরোর বাই-আউট ক্লজ বা রিলিজ ক্লজ ঝুলিয়ে রেখেছিল বার্সেলোনা।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালের জুনে মেসি তার পারিবারিক আইনজীবী ইনিগো হুয়ারেজের মাধ্যমে জানতে পারেন, রিয়াল মাদ্রিদ তাকে কিনতে আগ্রহী। মেসির বাবাকেও একই কথা জানিয়েছিলেন ওই আইনজীবী। বার্সায় মেসির তখনকার ‘রিলিজ ক্লজ’ ২৫ কোটি ইউরো দিয়েই কিনতে রাজি ছিল রিয়াল। প্রস্তাব অনুযায়ী ২০২১ সাল পর্যন্ত মেসিকে তারা বার্ষিক ২ কোটি ৩০ লাখ ইউরো পারিশ্রমিক দিত। এ ছাড়া মেসি বার্সা ছাড়লে তার বাবাকে আরো ১০ লাখ ইউরো উপহার দিত রিয়াল।
রিয়ালের এ চেষ্টা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। যদিও মেসিকে রাজি করাতে ক্লাবটি বেশ অভিনব পরিকল্পনাই করেছিল। একটি ব্যক্তিগত জেট বিমানে মেসির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলেন রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। সঙ্গে থাকবেন রিয়ালের স্পোর্টিং ডিরেক্টর মিগুয়েল পারদেজা, তাদের আইনজীবী এবং মেসির আইনজীবী। ‘স্পিয়েগেল’ আরো জানিয়েছে, মেসিকে কিনতে তাদের পারিবারিক আইনজীবীকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল রিয়াল। ওই আইনজীবী ইনিগো হুয়ারেজ নাকি মেসির বাবাকে বলেছিলেন, তার ছেলের কর ফাঁকি-সম্পর্কিত ঝামেলা মেটাতে রিয়াল ‘মারিয়ানো রাজয়কে (স্পেনের প্রধানমন্ত্রী) চাপ দেবে’।
খবরটি কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিয়াল অবশ্য স্পাইজেলের এই দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছে। ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই তথ্যেরই সত্যতা নেই। এটা সম্পূর্ণই মিথ্যা।’ তবে মেসি বা তার বাবার পক্ষ থেকে এখনো কেউ মুখ খুলেননি।
শেষ পর্যন্ত মেসিকে না পেয়ে ট্রান্সফারের বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বেলকে দলে ভেড়ায় রিয়াল। অথচ মেসি রিয়ালে যেতে রাজি হলে আর্জেন্টাইন তারকাটি হতেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার এবং তা টিকে থাকত এখনো পর্যন্ত। কারণ, এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নেইমারকে বার্সা থেকে ২২ কোটি ২০ লাখ ইউরোয় কিনেছে পিএসজি। কিন্তু মেসির ক্ষেত্রে ট্রান্সফার ফি হতো ২৫ কোটি ইউরো!
আরও পড়ুন
এএ
মন্তব্য করুন