images

দেশজুড়ে

বসতঘরে ঢুকেছিল অপরূপ সুন্দর দুই কালনাগিনী, অতঃপর...

মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ , ১০:২৩ পিএম

images

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি বসতঘর থেকে দুটি কালনাগিনী সাপ উদ্ধার করেছে ‌‘এনিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর’ সদস্যরা।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের দিত্তা গ্রামের কৃষক জব্বার মুন্সীর বসতবাড়ি থেকে সাপ দুটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা সাপগুলো প্রাপ্তবয়স্ক এবং এর একেকটির দৈর্ঘ্য প্রায় দুই ফুট। পরে দিত্তা গ্রামের সংরক্ষিত বনে সাপ দুটি অবমুক্ত করা হয়। এ সময় কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদীক উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন
ebmag

হবু স্ত্রী রিমঝিমকে হারিয়ে সানি বড়ুয়ার আবেগঘন পোস্ট

অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্য মাসুদ হাসান বলেন, দুপুরে কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের দিত্তা গ্রামের জব্বার মুন্সির বাড়িতে সাপ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে আমাদের খবর দেওয়া হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদীকের নেতৃত্বে সেখানে গিয়ে সাপ দুটি উদ্ধার করি। তবে সাপগুলো কোনো ধরনের আহত না হওয়ায় অবমুক্ত করা হয়েছে।

অ্যানিমেল লাভারস অব পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার বায়জিদ মুন্সী বলেন, সাপগুলোর বাংলা নাম কালনাগিনী। গ্রাম্য ভাষায় সুন্দরী নামেও ডাকা হয়। দুপুরে সাপ দুটি উদ্ধার করি। আসলে মানুষের জন্য এ প্রাণী ক্ষতিকর নয়। এ ছাড়া বেশিরভাগ সাপই মানুষের জন্য উপকারী। কিন্তু আমরা না বুঝে বিষমুক্ত অনেক সাপ মেরে ফেলি। এ কাজ আমাদের পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তবে যে কোনো স্থানে সাপ দেখা গেলে আমাদের খবর দিলেই সেগুলো আমরা উদ্ধার করব। শুধু সাপ নয় আমরা বিপদগ্রস্ত সব প্রাণীর পাশে দাঁড়াব।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক বলেন, এনিমেল লাভারস অব পটুয়াখালী সংগঠনটির সহায়তায় দুটি সাপ উদ্ধার করেছে। পরে তা অবমুক্ত করা হয়েছে।

কালনাগিনী সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, দেশে পাওয়া দৃষ্টিনন্দন সাপগুলোর মধ্যে কাল নাগিনী (Ornate Flying Snake) অন্যতম। অঞ্চলভেদে সাপটিকে উড়াল সাপ, সুন্দরী সাপ, কাল সাপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নামের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং স্নেক’ রয়েছে, তবে সাপটি মোটেও উড়তে পারে না। এটি গাছের উঁচু ডাল থেকে নিচু ডালে লাফিয়ে নামে। কাল নাগিনী দিবাচর ও শান্ত স্বভাবের সাপ। খুব বেশি বিরক্ত না হলে কামড়ায়ও না। এরা গিরগিটি, বাদুড়, ইঁদুর, ছোট পাখির ডিম ও কীটপতঙ্গ খায়। এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। সাপটি একবারে ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে দুইমাস পর বাচ্চা ফোটে।

তিনি বলেন, কাল নাগিনী নির্বিষ সাপ। অথচ নাটক-সিনেমায় কাল নাগিনীকে ভয়ংকর বিষধর সাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে মানুষ সাপটি দেখামাত্রই মেরে ফেলে। এতে সুন্দর প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

আরটিভি/এফএ