নিয়ম ভাঙায় সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের প্রাণহানি

আরটিভি নিউজ

শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪ , ০৩:৪২ এএম


নিয়ম ভাঙায় সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ জনের প্রাণহানি
ফাইল ছবি

বড় কোন খারাপ খবর না থাকায় ঈদুল ফিতরের দিন ভালোই কাটছিল দেশের মানুষের। কিন্তু বিকেল হতেই রাজধানীর সদরঘাটের একটি লঞ্চের ধাক্কায় আরেকটি লঞ্চের ছিঁড়ে তার আঘাতে নিহত বিল্লাল, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুক্তা, তিন বছরের মেয়ে মাইশাসহ ৫ জনের মৃত্যুর খবরে এক অন্যরকম পরিস্থির সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি কোন দুর্ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি অন্যায় চর্চার ফল। নিয়ম ভেঙে সদরঘাটে লঞ্চ ভেড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ছিঁড়ে যাওয়া লঞ্চের রশির আঘাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করেন এ দুর্ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এ ঘটনায় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

এদিন রাতে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন কমিটির আহ্বায়ক বিআইডব্লুউটিএর পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ছুটির দিন শুক্রবারই ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে নিয়মের কোনো তোয়াক্কা না করে একটি লঞ্চ বার্থিং করতে গিয়ে তীরে থাকা অপর একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। এই ছিঁড়ে যাওয়া রশির আঘাতেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এসব লঞ্চের মধ্যে যাত্রী পেতে অসুস্থ প্রতিযোগিতাও চলে। 

বিজ্ঞাপন

রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের পাশাপাশি গ্রেপ্তার ব্যক্তিদেরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। গ্রেপ্তার হয়ে যারা পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে আছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতি লাগবে। এ ব্যাপারে আজকালের মধ্যে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করব।

তিনি জানান, নির্ধারিত পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।

ঘটনার দিন ফায়ার সার্ভিস ঘটনার বর্ণনায় বলেছে, এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ রশি দিয়ে ১১ নম্বর পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ ঢোকানোর সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। ছিঁড়ে যাওয়া ওই রশির আঘাতেই পন্টুনে থাকা ওই পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

বিআইডব্লিউটিএ ইতোমধ্যে এমভি ফারহান-৬ ও তাসরিফা-৪ এর রুট পারমিট বাতিল করেছে। ঘটনার দিনই দুই লঞ্চের চালক ও ম্যানেজারসহ মোট ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। পাঁচজন হচ্ছেন- ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার আব্দুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় মাস্টার সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার ফারুক খান (৭০) এবং তাসরিফ-৪ লঞ্চ এর মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় মাস্টার মনিরুজ্জামান (২৮)। শুক্রবার আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের তিন দিন করে পুলিশ হেফাজতের অনুমতি দিয়েছে।

বৃহস্পতিবারই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে, রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে  লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে তার আঘাতে পিরোজপুরের মোটবাড়িয়ার বিল্লাল হোসেন (২৫), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬) ও শিশু মেয়ে সাইমা (৩), ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুরের রবিউল (১৯) এবং পটুয়াখালী সদরের মো. রিপন হাওলাদার(৩৮) নিহত হন। ঈদের আনন্দের মধ্যে এঘটনা প্রতিটি গ্রামেই বিষাদের ছায়া ফেলেছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission