• ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

নবম গ্রেডের বেতন-ভাতার দাবি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের

আরটিভি নিউজ

  ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৩৫

সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ ‘৯ম গ্রেডে’ বেতন-ভাতা চালুর দাবি জানিয়েছে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি এবং রেসিডেন্ট চিকিৎসক ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে থাকা ডাক্তাররাদ্রুত এই দাবি বাস্তবায়িত না হলে ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের নেতৃত্বে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ক্র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পোস্ট গ্রাজুয়েশন ট্রেইনি ডাক্তার ও ডাক্তার মুভমেন্ট ফর জাস্টিসের সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী।

তিনি বলেন, এমবিবিএস হলো সর্বজন স্বীকৃত একটি অনন্য ডিগ্রি। দীর্ঘ ৫-৬ বছর সময় ধরে মানবদেহের ভেতরে প্রতিটি মুহূর্তে ঘটতে থাকা রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে বিশদভাবে পড়াশোনা করা হয় এই এমবিবিএস ডিগ্রিতে। দীর্ঘ ৫ বছরে প্রায় হাজার খানেক পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেকোনো সরকারি হাসপাতাল, বড় বড় সরকারি ইন্সটিটিউট, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে রাতদিন এক করে অক্লান্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। যাদেরকে অ্যাপ্রোন পড়া, গলায় স্টেথোস্কোপ দেখেও সিস্টার-ব্রাদার বলে সম্বোধন করে অনেকে আনন্দ পায়। যাদের ওপরে চাইলেই হাত তোলা যায়, হুমকি-ধমকি দেওয়া যায়, রোগী মারা গেলেই ভুল চিকিৎসা বলে পেটানো যায়। এমবিবিএস পাস করে আরও ৮/১০ বছর পর্যন্ত একাধিক ডিগ্রি নিতে অনেক গঞ্জনা সইতে হয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েড ট্রেইনি চিকিৎসকদের।

ট্রেইনি চিকিৎসক ইমরান সিকদার বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কয়েকটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্স চালু আছে। রেসিডেন্সি, নন-রেসিডেন্সি, এফসিপিএস; এদের মধ্যে বিশ্বজনীন ও উল্লেখযোগ্য। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা হয় এবং আবেদন ফরমের দাম পরীক্ষাভেদে ৬ থেকে ১১/১৫ হাজার। কেউ ২ থেকে ৩ বছরে চান্স পায় কেউ ১০ থেকে ১২ বছরেও পায় না। ভর্তি পরীক্ষা পাস করে ভর্তি হতে হয় কোর্সভেদে ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ পর্যন্ত টাকা দিয়ে। এই সময়টায় একজন ডাক্তারের ক্যারিয়ার থেমে থাকলেও থেমে থাকে না বয়স। বৃদ্ধ বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান; তাদের ভরণপোষণ সবই চলতে থাকে সমানতালে।

শর্ত অনুযায়ী— একজন পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে থাকা ডাক্তার তার কোর্সের বাইরে কোথাও চাকুরি করতে পারবেন না। এই ডাক্তারদের মাসিক ভাতার শুরুটা হয়েছিল ১০ হাজার টাকা দিয়ে ২০১০ সালে। কয়েকবার কয়েক দফায় এই ডাক্তারগুলো আন্দোলন করে আজ মাসিক ভাতা ২৫ হাজার টাকা। ঢাকা শহরে চাকরি সূত্রে যারা থাকেন তারা হয়ত জানেন, এই টাকায় ঢাকার মতো শহরে থেকে খেয়ে নিজের পরিবার খরচ চালানো কতটা দায়! যাদের শুধু বই-রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল। তাদের সারাক্ষণ ভাবতে হয় পরিবার কীভাবে চলবে?

তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুত বৈষম্য দূর হোক। আমাদের পোস্ট গ্রাজুয়েশন কোর্সের যে ডাক্তাররা আছেন তাদের অবিলম্বে বেতন-ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধাদি যেন নবম গ্রেড অনুযায়ী ধার্য করা হয়। এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। ২৫ হাজার টাকা থেকে নবম গ্রেডে উত্তীর্ণ করা হোক। আমরা মেডিকেল অফিসার সমমর্যাদা চাই।

ডা. নুরুন্নবী বলেন, সরকার তো বিভিন্ন জায়গায় অর্থ বিনিয়োগ করছে। উন্নত চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য যদি সরকার বিনিয়োগ করে তাহলে পোস্ট গ্র্যাজুয়ট ট্রেইনি চিকিৎসকরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে গড়ে উঠবেন। দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নিতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কমবে। দেশের টাকা দেশেই থাকবে।

তিনি বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরেও অনেক আশা নিয়ে মাঠে নামে একদল চিকিৎসক, যারা এখন পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে আছেন। বিসিএস দিয়ে যেসব চিকিৎসক সরকারি চাকরি করছেন, তারা যে পরিমাণ পরিশ্রম করছেন আমরা সমপরিমাণ পরিশ্রম করি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি কাজ করি। কিন্তু আমরা কেন বৈষম্যের শিকার হব? আমরা তো তাদের মতো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। এই বেতন-ভাতা বৃদ্ধিই আমাদের মূল দাবি। আমরা ২৫ হাজার নয়, নবম গ্রেডে ভাতা চাই।

পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে থাকা এ চিকিৎসক বলেন, আমাদের ডিএমজে সোসাইটি (ডক্টরস মুভমেন্ট ফর আস্টিম সোসাইটি) নামক সংগঠন রয়েছে। সংগঠনের হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ ভাতা নবম গ্রেডে উত্তীর্ণ করার দাবি আমরা জানিয়ে আসছি। আমাদের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে আছে। আমাদের দাবি যদি সহসা বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে হলে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়