• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর তিন দফা প্রস্তাব পেশ

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০৪ জুন ২০২০, ০৯:৪০
সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর তিন দফা প্রস্তাব পেশ
ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্র ও অন্যান্য জলজ সম্পদের টেকসই ব্যবহারে বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য তিন দফা প্রস্তাব পেশ করে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সমুদ্রকর্মকাণ্ডে তাদের প্রতিশ্রুতি নবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাসাগরের এবং অন্যান্য জলজ সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য, বিশেষ করে আমাদের সম্পদ এবং পণ্যের বাজারে প্রবেশ এবং প্রযুক্তি সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (৩ জুন) রাতে ভিডিও কনফারেন্সে সুইজারল্যান্ডের জেনেভোয় ‘ভার্চুয়াল মহাসাগর সংলাপ’এ বক্তৃতা করেন।

‘ওশান অ্যাকশন ভবিষ্যতের প্রজন্মকে সবল করে গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আসুন আমরা হাতে হাত রেখে সমুদ্র অ্যাকশনের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতির নবায়ন করি,’ সংলাপের আজকের ‘শতকোটির পুষ্টি’ শীর্ষক অধিবেশনে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে, সামুদ্রিক সম্পদের পরিপূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় সম্পদ, সক্ষমতা ও প্রযুক্তিসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি, আঞ্চলিক মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি এবং অবৈধ, অননুমোদিত ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ নির্মূল বন্ধের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মৎস্য উন্নয়ন বিষয়ে যৌথ গবেষণা পরিচালনার উপর জোর দেন।

তৃতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা, উপকূলীয় বাসস্থান ও জৈববৈচিত্র রক্ষায় মাছের উৎস চিহ্নিতকরণ এবং এর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’ এবং ফ্রেন্ডস অব ওশান অ্যাকশন’র ব্যবস্থাপনায় জেনেভোয় পাঁচদিনব্যাপী এই সংলাপ গত ১ জুন শুরু হয়েছে।

সংলাপের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘মহাসাগরীয় স্থিতিস্থাপকতা, উদ্ভাবন এবং কর্মের জন্য জনগোষ্ঠীগুলোকে সংযুক্ত করা।’

করোনাভাইরাস মহামারী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এই সভাটি এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন সমগ্র বিশ্ব এই ঘাতক ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত।

তিনি বলেন, ‘মহাসাগরের এবং মানুষের স্বাস্থ্যের মধ্যে যে যোগসূত্র রয়েছে তা নিয়ে এই মহামারি সবাইকে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে। কেননা অসুস্থতা মোকাবিলায় সমুদ্র একটি বড় উৎসের যোগানদাতা।’

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শক্তি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উন্নত স্বাস্থ্য খাতে ২০৩০ আলোচ্যসূচির ব্যাপক লক্ষ্যগুলোর ক্ষেত্রে মহাসাগরের অবদান রয়েছে।

তিনি এজেন্ডা ২০৩০-এর লক্ষ্য ১৪’র বাস্তবায়নে জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এটি আগের চেয়ে এখন বেশি সংকটজনক।’

একটি স্বাস্থ্যসম্মত মহাসাগর খাদ্য ও পুষ্টির একটি বিশাল উৎস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্র এখন যা করছে তার চেয়েও ছয় গুণ বেশি খাবার সরবরাহ এবং পুষ্টিপূরণে সহায়তা করতে পারে।’

‘গ্লোবাল নিউট্রিশন রিপোর্ট ২০২০’র উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অনূর্ধ্ব-৫ বছর বয়সী সব শিশুর প্রায় এক চতুর্থাংশ অপুষ্টির শিকার।

স্থায়িত্বের জন্য জটিল ভারসাম্যে আঘাত হানার উপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যেই ভূমি ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে যথেষ্ট চাপ রয়েছে।’

মাছের মজুদের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও মারাত্মক উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাই, আমাদের স্থায়িত্বের জন্য টিকে থাকার জটিল ভারসাম্যে আঘাত করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

‘উন্নত পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন আমাদের অগ্রাধিকার,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রম-এনপিপি সকল নাগরিকের, বিশেষ করে কিশোরী, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদাত্রী মায়েদের পুষ্টিগত অবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের ফলেই ৫ বছর বয়সের নিচের যেসব শিশুর অপুষ্টি সমস্যা ছিল তা দূর হয়েছে।

বিশ্বে বাংলাদেশ মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মৎস্য সম্পদ দেশের জনগণের প্রায় অর্ধেক প্রাণীজ প্রোটিনের উৎস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ, যারমধ্যে প্রায় ১৪ লাখ নারী রয়েছে, বাংলাদেশে তারা জীবন ধারণের জন্য এই মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। বছর বছর মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, তার সরকার ‘সুনীল অর্থনীতি’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘নগরায়ণের ফলে স্থানীয় জলের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই আমরা আমাদের সুনীল অর্থনীতির উদ্যোগের অংশ হিসেবে সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

২০১৭ সালের মহাসাগর সম্মেলনের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সে সময় আমরা কিছু স্বেচ্ছা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম এবং আইন করে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে শুরু করে যেকোনো প্রকারের দূষণ থেকে সমুদ্র সম্পদ ও পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছি। খবর বাসস।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • বাংলাদেশ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ঢাকায় কাতারের আমির, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক আজ
‘নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর পরিকল্পনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী’
জাতীয় পতাকার নকশাকারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
‘মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে’
X
Fresh