এখন কেন ইভ্যালির মালিক গ্রেপ্তার, প্রশ্ন গ্রাহকদের
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতারণার ফাঁদ অনেক আগেই গ্রাহকের সামনে ফুটে উঠেছে। ইভ্যালির কাছ থেকে পাওনা টাকা চেয়ে রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলন করেছে হাজার হাজার গ্রাহক। কিন্তু তখনও নিশ্চুপ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) গ্রেপ্তারের পর প্রশ্ন তুলছেন গ্রাহকরা। ইভ্যালির মালিক গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফেরত দিতে আগামী ছয় মাস সময় চেয়েছিল। কিন্তু সেই সময় দেয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুরের নিলয় কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংয়ের বাসায় (হাউজ ৫/৫এ, স্যার সৈয়দ রোড) অভিযান চালিয়ে ইভ্যারির সিইও এবং চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২।
ইভ্যালির সিইও’কে গ্রেপ্তার পর শতশত গ্রাহক ভিড় করছেন। সেখানে উপস্থিত থাকা গ্রাহকদের মধ্যে অনেকে বলছেন, ইভ্যালির মালিক দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। সেই বিষয়টি নিয়ে বেশ আন্দোলন করেছি। কিন্তু তখন কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইভ্যালির মালিককে গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইভ্যালির চুক্তি হতে যাচ্ছিল। তখনও নিশ্চুপ ছিল র্যাব ও পুলিশ। এখন হঠাৎ করে কেন গ্রেপ্তার করা হলো। এখন গ্রাহকদের পাওনা টাকা দেবে কে? গ্রাহকরা কোথায় গিয়ে পাওনা টাকা চেয়ে আবেদন করবেন? এসব বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান হওয়া দরকার।
ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারর সময়ে মোহাম্মদপুরে বাসার সামনে আন্দোলন করছেন লিমন মিয়া। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ই-অরেঞ্জের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জেলে রয়েছেন কিন্তু গ্রাহকদের পাওনা টাকা নিয়ে কোনো সমাধান আসনেনি। এখন ইভ্যালির মালিক গ্রেপ্তার হলে আমাদের পাওনা টাকা দেবে কে? লিমনের মতো অনেক গ্রাহক নিজেদের পাওনা টাকা নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে।
ইভ্যালির মালিককে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) র্যাব সদরদপ্তরে নিয়েছে।
গ্রাহকরা স্লোগান দিচ্ছেন, রাসেল ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। দুপুরের দিকে বাসাটিতে অভিযান শুরু করে র্যাব।
উপস্থিত এক গ্রাহক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি তিন লাখ টাকার চেক পেয়েছি। এখন রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হলো। এখন আমার টাকার কী হবে। আমরা তো এতদিন আশায় ছিলাম যে, টাকা ফেরত পাব। কিন্তু তিনি যদি কারাগারে থাকেন, তাহলে তো আর টাকা ফেরত নাও পাওয়া যেতে পারে। এখন কী করব, কোথায় যাব?
এর আগে রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। এ মামলাতেই রাসেল দম্পতিকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে র্যাব।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক অনিন্দ তালুকদার। তিনি বলেন, আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেন। মামলার নম্বর- ১৯।
এফএ
মন্তব্য করুন