• ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
logo

বাংলাদেশে এমন সাপ এর আগে কেউ দেখেনি!

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:০১
সাপ×বাংলাদেশ×পঞ্চগড়×গুইসাপ×এক্সেভেটর×এলাকাবাসী×কাটা×মেশিন×
ছবি সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে নতুন প্রজাতির সাপ উদ্ধার করেছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরী ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশে নতুন প্রজাতির এই সাপটির নাম রেড কোরাল কুকরি স্নেক। পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারকারী মো. সহিদুল ইসলাম এই সাপটি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিআরসি’র প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমন এই সাপটি চট্টগ্রাম নিয়ে যান।

পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও উদ্ধারকারী মো. সহিদুল ইসলামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরী ইউনিয়নের ডাবরভাংগা নতুনহাট এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মো. হায়দার আলী।

সহিদুল ইসলাম জানান, গেলো ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরী ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ বাজারের পাশের একটি উঁচু জায়গা এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে কাটার সময় একটি সাপ বেরিয়ে আসে। তখন এলাকাবাসী আমাকে খবর দেয়। খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে আটটির মতো সাপ উদ্ধার করি। সাপগুলো হচ্ছে-রেড কোরাল কুকরি দুটি, গুইসাপ ১টি, হেলে ২টি, কৃষ্ণ কালাচ ১টি।

উদ্ধারকৃত সাপগুলোর মধ্যে রেড কোরাল কুকরি সাপটি এস্কেভেটর দিয়ে আঘাত পেয়েছে। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। পরে রাজশাহী থেকে আসা ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস রোমন স্যারের কাছে হস্বান্তর করেছি। অন্য সাপগুলোকে ফিরোজ আল সাবাহ ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অবমুক্ত করা হয়।

তিনি জানান, তার এলাকার মিজানুর রহমান, বাবুল ইসলাম, ইউসুফ আলী, রাসেলসহ কয়েকজন সাপগুলো উদ্ধারে ও অবমুক্ত করতে সহযোগিতা করেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রশিক্ষক ও সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রোমন জানান, সাপটি মারাত্মকভাবে আহত। জখম হয়েছে। সাপটি বর্তমানে রাজশাহীতে সাপ উদ্ধার ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমি কিছুক্ষণ আগে পঞ্চগড় থেকে রাজশাহীতে এসে পৌঁছেছি।

সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রোমন আরটিভি নিউজকে জানান, উজ্জল কমলা ও লাল প্রবাল রঙের এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল প্রবাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশ দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় দেখা যায়। পৃথিবীর ২১তম সাপটি মৃত অবস্থায় ও ২২তম সাপটি মারাত্মকভাবে আহতাবস্থায় পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, সর্বপ্রথম এই সাপের দেখা মেলে ১৯৩৬ সালে ভারতের উত্তরপ্রদেশে।

দীর্ঘ ৮২ বছর পর ২০১৯ সালে আবার ঊত্তর প্রদেশের খেরি জেলায় দেখা গিয়েছিল লাল প্রবাল সাপটি। এছাড়া নেপালের মহেন্দ্রনগর, চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্ক, ভারতের নৈনিতাল, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় েএমন সাপ।

তিনি আরও জানান, সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যাবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাপটির এ বিষয়ে গবেষণা চলছে।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ফটোগ্রাফার ফিরোজ আল সাবাহ জানান, সকল বন্যপ্রাণীসহ এমন দুর্লভ প্রজাতির সাপ আমাদের অমূল্য সম্পদ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতন হওয়াসহ বন্যপ্রাণীর আবাস ধ্বংস বন্ধের আহ্বান জানান তিনি। ভুটান, নেপাল, চীন ও ভারতের কাছাকাছি হওয়ায় পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় এই সাপটি আরও থাকতে পারে।

জেবি

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নেপালে দুই রুপা জিতলেন বাংলাদেশের জারা
বেসামরিক পদে নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী
প্রেমের টানে বাংলাদেশে কোরিয়ান যুবক, গ্রহণ করলেন ইসলাম ধর্ম
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৩ নভেম্বর)