কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়ে খবরের শিরোনাম ৩ স্কুলছাত্রী
কুড়িয়ে পাওয়া ৮০ হাজার টাকা প্রকৃত মালিককে ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তিন স্কুলছাত্রী। তারা নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হোগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে ওই উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের কৃষক আবুল কালামের মেয়ে রাবেয়া আক্তার ও সহপাঠী শারমিন আক্তার ও নাজমা আক্তার স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এ টাকা কুড়িয়ে পায়।
জানা যায়, একই উপজেলার মেঘশিমূল গ্রামের গৃহিণী রাবেয়া বেগম ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে হারিয়ে ফেলেন। হারিয়ে যাওয়া টাকা খোঁজার জন্য ব্যাংকের ম্যানেজারকে ফোন করে জানালে আগিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরশাদ ফকির ও ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান ব্যাংক রাস্তায় টাকা খুঁজতে থাকেন।
এসময় স্কুলছাত্রী রাবেয়া বেগমের সামনে আসলে সে জিজ্ঞেস করে, আপনাদের কি কোনো কিছু হারানো গেছে? এসময় তারা জানান, তাদের ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ওঠানো ৮০ হাজার টাকা হারানো গেছে।
তখন স্কুলছাত্রী রাবেয়া আক্তার জানায়, টাকাগুলো তারা মসজিদের সামনের রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে।
পরে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও হোগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে সেই টাকা ফেরত দেয় ওই শিক্ষার্থীরা।
টাকার মালিক রাবেয়া বেগম বলেন, আমি দুপুরে হোগলা ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে কখন যে পড়ে যায় বুঝতে পারিনি। তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকের ম্যানেজারকে ঘটনাটি ফোন করে জানালে কিছুক্ষণ পরে ম্যানেজার জানায় স্কুলছাত্রী টাকাগুলো পেয়েছে। ওদের সততা দেখে অবাক হয়েছি, ওরা চাইলে কাউকে না বলে খরচ করতে পারতো।
স্কুল ছাত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, আমার বাবা একজন কৃষক। আমি একজন খেটে খাওয়া কৃষকের সন্তান। সৎ পথে টাকা উপার্জন করা কতটা পরিশ্রমের এবং কষ্টের, পরিবার সেটা আমাকে শিক্ষা দিয়েছে। পরিবারের আদর্শ, শিক্ষকদের উপদেশ অন্যের টাকায় লোভ করতে নেই। তাই কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়েছি।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনজন স্কুলছাত্রীর বুদ্ধিমত্তা, আদর্শ ও সততায় মুগ্ধ হয়েছি। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে আদর্শবান এই তিন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আরশাদ ফকির বলেন, হারিয়ে যাওয়া টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফেরত দেওয়াতে একটা সততার নজির স্থাপন হলো। ছাত্রীদের এমন কাজে পরিবার ও বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলে উচ্ছ্বসিত।
মন্তব্য করুন