ট্রাক থেকে নদীতে ছুড়ে দেড় বছরের শিশুকে হত্যা, গ্রেপ্তার বাবা
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় ব্রিজের উপরে ট্রাক থেকে শিশু সন্তানকে নদীতে ছুড়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাবা ইমরান আহমেদ (৩০)।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিন বিকেল থেকে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমু সরকার ১৬৪ ধারায় ট্রাকচালক ইমরান আহমেদের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেন।
ইমরান সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাট উত্তরপাড়ের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্ত অপর আসামি ট্রাকের হেলপার একই এলাকার বাদল মিয়া (২২) পলাতক রয়েছেন।
স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে জানান, সুনামগঞ্জের দুয়ারা বাজারে অভিযান চালিয়ে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি চারটি বিয়ে করেছেন। ইয়াসমিন এবং ইমরানের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সী মেয়ে এনি। এ ছাড়া ইয়াসমিনের আগের সংসারের এক সন্তান রয়েছে।
স্বামী-সন্তান রেখে ইয়াসমিন আক্তার অন্য পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা করায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সালিশে শিশু এনির জন্য ইমরান প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি ইমরান তার সন্তান এনির জন্য নিয়মিত টাকা না দেওয়ায় ইয়াসমিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
চিকিৎসা করানোর কথা বলে গত ২৯ জানুয়ারি রাতে ইয়াসমিন ও মেয়ে এনিকে ট্রাকে তুলে নেন ইমরান। সিলেট থেকে ট্রাকটি বানিয়াচংয়ের কাগাপাশা ব্রিজে উঠলে মেয়ে এনিকে ছুড়ে পানিতে ফেলে দেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি ইয়াসমিনকে নবীগঞ্জের একটি রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে ইমরান তার সহযোগী বাদল মিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যান। এদিন শুটকি নদীর শাখায় কাগাপাশা ব্রিজের নিচে এক শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন সরকারি সিদ্ধান্তে বেওয়ারিশ হিসেবে শিশুটিকে দাফন করা হয়।
দাফনের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দেখে মা ইয়াসমিন আক্তার এসে সন্তান এনিকে শনাক্ত করে তার সাবেক স্বামীসহ দুজনের নামে মামলা করেন।
মন্তব্য করুন