নারায়ণগঞ্জে ইউপি উপনির্বাচনে ফল ঘোষণার পর সংঘর্ষ, যুবক নিহত
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য পদে উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর পরই ২ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মো. হৃদয় ভূঁইয়া নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় ইউনিয়নের দুধঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ওই যুবকের চাচাতো ভাই ফারুক ভূঁইয়া (৩৫)। নিহত হৃদয় ওই এলাকার আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনের নাম জানা গেছে।
তারা হলেন দুধঘাটা গ্রামের ওমর ফারুক ভূঁইয়া, মো. আপন, সাখাওয়াত, মফিজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, মো. রাশেদ ও রিপন। তাদের মধ্যে ওমর ফারুক ভূঁইয়াকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক খবিরউদ্দিন, কনস্টেবল মঞ্জু মিয়া, জুয়েল রানা, আবদুস সালাম, কবির হোসেন, নূর মোহাম্মদ ও আল আমিন। তারা সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার এসআই পঙ্কজ সরকার জানান, নির্বাচন পরবর্তীতে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বছরের ২০ মে পিরোজপুর ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. মুজিবুর রহমান মারা যান। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শনিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দুধঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গণনায় আবদুল আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট এবং কায়সার আহম্মেদ তালা প্রতীকে ৮১১ ভোট পান। কিন্তু কায়সার আহম্মেদ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে আবার ভোট গণনার দাবি জানান। পরে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবারও ভোট গণনা করলে তালা প্রতীকের প্রার্থী আগের ভোটের সঙ্গে আরও এক ভোট বেশি পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, এ নিয়ে কায়সারের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তিনি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গণনার দাবি জানান। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ দিকে কায়সারের সমর্থকেরা বিষয়টি জানতে পেরে লাঠিসোঁটা নিয়ে ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন এবং প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে কেন্দ্র ছাড়তে বাধা দেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই হৃদয় নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। তার শরীরের সামনের অংশে বেশ কয়েকটি ছররা গুলি লেগেছে। ফারুক ভূঁইয়া নামে আরও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে তাকে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।
মন্তব্য করুন