মেহেরপুর সদরে আনারুল, মুজিবনগরে আমাম হোসেন জয়ী
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মেহেরপুরের দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে এসেছে নতুন মুখ। সদরে আনারুল ইসলাম এবং মুজিবনগরে আমাম হোসেন মিলু বিজয়ী হয়েছেন। আমাম হোসেন মিলু মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্যদিকে আনারুল ইসলাম আমদহ ইউনিয়নের তিন তিন বারের সাবেক চেয়ারম্যান।
বুধবার (৮ মে) রাত পৌনে ৯টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যায়। প্রথম ধাপে মেহেরপুর জেলার সদর ও মুজিবনগর উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়।
সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থীর মধ্যে আনারুল ইসলাম মোটরসাইকে প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪০ হাজার ৯২৩। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এস এম ইব্রাহিম শাহীন কাপ পিরিচ প্রতীকে ১০ হাজার ৫০৭ ভোট পেয়েছেন। অপর প্রার্থী হাশেম আলী (আনারস) ২ হাজার ৮৭৭ ভোট এবং আব্দুল মান্নান (ঘোড়া) ৩৭২ ভোট পেয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লতিফুন নেছা লতা পুনরায় বিজয়ী হয়েছেন। বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে তিনি ৩৪ হাজার ১২৩ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সামিউন বাসিরা পলি (হাঁস) ১৭ হাজার ৬৩৪ ভোট পেয়েছেন। এ পদে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া বিএনপি নেত্রী রোমানা আহম্মেদের কলস প্রতীকে পড়েছে ৮৬৯ ভোট।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকে ৩৬ হাজার ৩১৮ ভোট পেয়ে পুনরায় বিজয়ী হয়েছেন হাশেম আলী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মো. শাহীন (টিউবওয়েল) ১৫ হাজার ৯৭৮ ভোট।
প্রসঙ্গত, এ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রুমানা আহম্মেদ ছাড়া বাকি সব প্রার্থী আওয়ামী লীগের।
৭টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর সদর উপজেলায় মোট ভোটারের পরিমাণ ২ লাখ ১৮ হাজার ৮০৪ জন।
এদিকে মুজিবনগর উপজেলায় তিনট পদেই নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে আমাম হোসেন মিলু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোছা. তকলীমা এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে বি এম জাহিদ হাসান বিজয়ী হয়েছেন। বেসরকারি ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চেয়ারম্যান পদে আমাম হোসেন মিলু আনারস প্রতীকে ১৬ হাজার ৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রফিকুল ইসলাম তোতা (কাপ পিরিচ) ১৫ হাজার ১০০ ভোট পেয়েছেন। অপর প্রার্থী কামরুল হাসান চাঁদু ঘোড়া প্রতীকে ২ হাজার ৮২১ ভোট এবং মাহবুব রহমান (মোটরসাইকেল) ৩৪১ ভোট পেয়েছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী মোছা. তকলীমা (কলস) পেয়েছেন ২০ হাজার ৫৮ ভোট এবং বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা খাতুন (ফুটবল) ১৪ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদেও এসেছে নতুন মুখ। বি এম জাহিদ হাসান টিউবওয়েল প্রতীকে ২০ হাজার ৬৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মতিউর রহমান চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৬৭৬ ভোট।
৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৩৫ ভোটকেন্দ্রে ৩৬ হাজার ৩৪৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ৮৫ হাজার ২৫৯ জন। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৪২.৬৩%।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ বাদে অন্য দলের প্রার্থীরা অংশ নেয়নি।
উল্লেখ্য, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ১ হাজার ৬৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন রয়েছেন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ ২৮ জন ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
প্রথম ধাপের নির্বাচনে ১১ হাজার ৫৫৬টি কেন্দ্র, ৮১ হাজার ৮০৪ ভোটকক্ষ, ৩ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ ও ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় বুধবার (৮ মে) ভোট অনুষ্ঠিত হয়, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন