প্রস্তুত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ গোর-এ শহীদ ময়দান
পবিত্র ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দান। এ ময়দানে একসঙ্গে ছয় লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
রোববার (১৬ জুন) ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন করেন রংপুর বিভাগীয় র্যাব-১৩ এর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল আহসান। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার নামাজ যাতে মুসল্লিরা যাতে সুষ্ঠু ও নিরাপদে আদায় করতে পারেন, সেজন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। বরাবরের মতো এবারও নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের জন্য থাকছে দুটি স্পেশাল ট্রেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গোর-এ শহীদ ঈদগাহ ময়দানের আয়তন ২১.৯৯ একর। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকেই এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে আগে বড় কোনো মিনার ছিল না। ২০১৫ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করেন। ২০১৭ সালে সম্পন্ন হয় নির্মাণকাজ। ৫২ গম্বুজের মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। গম্বুজগুলোর দুই পাশে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার রয়েছে।
ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়ান) উচ্চতা ৪৭ ফিট। এছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বা ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনারটি সিরামিকস দিয়ে নির্মিত। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে লাইটিং ব্যবস্থা। রাত হলে আলোকিত হয়ে ওঠে ঈদগাহ মিনার।
২০১৭ সাল থেকেই এখানে ঈদের নামাজ আদায় করছেন দিনাজপুরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা। এবার ঈদুল আজহার জামাতের জন্য সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের জন্য ৩০০টি ওজুখানা ও ৪০টি টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। পাঁচ জায়গায় সরবরাহ করা হবে খাবার পানি। পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের সমন্বয়ে ঈদগাহ মাঠে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ৫০টি সিসি ক্যামেরা। মাঠের মাঝখানে স্থাপন করা হয়েছে দুটি ওয়াচ টাওয়ার। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টেও স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায়ের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে ঈদগাহের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করতে যান ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ ও পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলালসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন