জরুরি প্রয়োজন শুনে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে রক্ত দিলেন ইউএনও
হাসপাতালে এক রোগীর জন্য জরুরি রক্তের প্রয়োজন কিন্তু রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না, এমন খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে নিজে রক্তদন করেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছিয়া বেগম (৩৮) নামে ওই রক্তশূন্য অসুস্থ্য নারীকে রক্তদান করেন তিনি।
অসুস্থ্য আছিয়া বেগম জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ঠুনঠুনিয়া এলাকার জয়নুল ইসলামের স্ত্রী।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভুগছিলেন আছিয়া বেগম (৩৮) নামে এক নারী। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে নিচ্ছিলেন চিকিৎসা। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রক্তশূন্যতা ধরা পড়ে। চিকিৎসা দ্রুত ৬ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেয়। এর পর রক্ত সংগ্রহে আছিয়ার স্বামী জয়নুল ইসলাম রক্ত জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়। এদিকে জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে একজন রোগীর রক্তের বিষয়টি জেনে হাসপাতালে ছুটে যান ইউএনও ফজলে রাব্বি। পরে তার রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক সব প্রক্রিয়া শেষে নিজেই রক্তদান করেন ওই রোগীকে। চিকিৎসক ও রোগীর স্বামীর কাছে খোঁজ-খবর নেন এবং তাকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত তেঁতুলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান, তেঁতুলিয়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবেল আলম, তেঁতুলিয়া ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারুনু অর রশিদসহ তার অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
ওই রোগীর স্বামী জয়নুল ইসলাম বলেন, আমার বউয়ের রক্ত লাগবে ৬ ব্যাগ৷ আজকের মধ্যেই এক ব্যাগ রক্ত দিতে হবে। পরে আমার ও আমার পরিবারের কারও সঙ্গে আমার স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ না মেলায় আমি বিভিন্ন জনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু রক্তদাতা না পাওয়ায় অনেক দুশ্চিন্তায় পড়ে ছিলাম। পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হলো রক্ত পাওয়া গেছে, আমার স্ত্রীকে একজন রক্তদান করবেন। এ সময় আমি জানতে পারি আমার স্ত্রীকে যিনি রক্ত দান করলেন তিনি আমাদের উপজেলার ইউএনও স্যার। স্যারের এমন সহানুভূতি পেয়ে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি শুধু রক্তদান করেই পাশে থাকেননি আমাদের। আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং খোঁজ-খবর নিয়েছেন। আমার কোন প্রয়োজন হলে তাকে জানাতে বলেছেন।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, কাজের মাঝে হঠাৎ জানতে পারি একজন রোগীর জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। একই সঙ্গে রোগীর পরিবার রক্তদাতা সংগ্রহ করতে না পারায় বিষয়টি একটু খারাপ লেগে যায়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে গিয়ে জানতে পারি আমার রক্তের গ্রুপের সঙ্গে রোগীর রক্তের গ্রুপের মিল রয়েছে। তাই ক্রস চেক করে নিজেই রক্তদান করেছি।
রোগীর কোন সমস্যা বা আর্থিক কোন সহযোগিতা চাইলে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
একই সঙ্গে রোগীর কোনো সমস্যা বা আর্থিক কোনো সহযোগিতা চাইলে তাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরটিভি/এমএ
মন্তব্য করুন