তিস্তা বাঁচাতে উত্তরের পাঁচ জেলায় কর্মসূচি, পদযাত্রায় জনস্রোত

আরটিভি নিউজ

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০২:১০ পিএম


তিস্তা বাঁচাতে উত্তরের পাঁচ জেলায় কর্মসূচি, পদযাত্রায় জনস্রোত
ছবি: সংগৃহীত

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে এ কর্মসূচি চলছে।

বিজ্ঞাপন

লালমনিরহাট সদর, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জের দুটি স্থানে ও আদিতমারী; রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া; কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও উলিপুর; নীলফামারীর ডিমলা এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এ কর্মসূচি চলছে। 

‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার পর তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি পদযাত্রা শুরু করে। এ পদযাত্রায় তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন। গণপদযাত্রাটি লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হবে।

বিজ্ঞাপন

গতকাল সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান, জনতার সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচি। রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে অনুষ্ঠানরত স্মরণকালের এই বৃহৎ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের লাখো মানুষ। প্রথম দিনের মতো আজ সমাপনী দিনেও সকাল থেকেই ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ হিসেবে দেশীয় সংগীত, নৃত্য, খেলাধুলাও চলছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতেও সকাল থেকেই তিস্তা নদীর তীরে জমে উঠেছে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তার দুই পাড়ের এই সমাবেশস্থল। আজও তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান সম্বলিত পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন। আজ বিকেলে কর্মসূচির সমাপনী জনতার গণসমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

14

গতকাল কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও তিস্তার পানি ইচ্ছেমতো আটকে রাখে বা প্রত্যাহার করে ভারত। তারা নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে; কিন্তু বাংলাদেশের কৃষকেরা পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারেন না। আবার বর্ষার মৌসুমে পানি ছেড়ে দিলে ভাঙে বসতবাড়ি, নষ্ট হয় ফসল। নদী ও নদীপারের বাসিন্দাদের রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে।‌ ভারতকে বলতে হবে, আমার পানির ন্যায্য হিস্যা আমি চাই।

তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার মানুষেরা তিস্তা নদীর পানি বৈষম্যের শিকার হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা বাকস্বাধীনতা পেয়েছি। রংপুরের মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে জেগে উঠেছে। এ লক্ষ্যে তিস্তা নদীর পানি চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে ৫ জেলার মানুষকে নিয়ে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে তিস্তা পানি নিয়ে বৈষম্যের বিষয়টি গোটা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

আরটিভি/এমএ/এআর

 

 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission