গাজীপুরের শ্রীপুরে সৎ বাবা ছুরি গরম করে শিশু মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাবাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। রোববার রাত ১১টায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল তাকে এ দণ্ড দেন।
সোমবার (১০ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ।
শিশু মানহা আক্তার বিবি মরিয়ম (৪) মনির হোসেন ও রুমি আক্তার দম্পত্তির মেয়ে।
অভিযুক্ত শামসুজ্জামান মান্নান (৩৫) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার তালুয়াচাদপুর গ্রামের ইউছুফ আলীর ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার শ্রীপুর-মাওনা সড়কের মুন্সিবাড়ী এলাকার বাড়িতে স্ত্রী ও ওই মেয়েকে নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করতেন।
শিশুর মা রুমি আক্তার জানান, টিকটকের মাধ্যমে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার তালুয়াচাদপুর গ্রামের শামসুজ্জামান মান্নানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে পূর্বের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে গত চার মাস আগে মেয়েকে নিয়ে তাকে বিয়ে করে শ্রীপুরে বসবাস করতে থাকেন তিনি। গত শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে তার স্বামী চাকু গরম করে শিশু মরিয়মের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়। শিশুর চিৎকার শুনে ছুটে এসে প্রতিবাদ করায় তাকেও মারধর করে। ঘটনার দুদিন পর রোববার ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা অভিযুক্ত সৎ বাবাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে আহত শিশুকে স্থানীয় ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তবে ক্ষত স্থানে ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
অভিযুক্ত শামসুজ্জামান মান্নান বলেন, আমি নেশাগ্রস্ত ছিলাম। মরিয়ম কথা না শোনায় আমি ছুরি গরম করে ছ্যাঁকা দিয়েছি। আমি আমার অপরাধ স্বীকার করছি। এমন জঘন্য কাজ করা আমার ঠিক হয়নি।
শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাহার শাকিল বলেন, স্থানীয় লোকজন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্তকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং স্থানীয়দের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তাদের প্রচেষ্টায় অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
আরটিভি/এমকে