অর্ধশত বিঘা নদী দখল করেও ‘রিলাক্স’ আওয়ামী লীগ নেতা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ 

মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ , ০১:২২ পিএম


অর্ধশত বিঘা নদী দখল করেও ‘রিলাক্স’ আওয়ামী লীগ নেতা
ছবি: আরটিভি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভৈরব নদী এখন আর শুধুই একটি জলপ্রবাহ নয় এটি রীতিমতো একটি দখলদার চক্রের কবলে পড়া সম্পদে পরিণত হয়েছে। উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শমসের এবং তার দুই ভাই শফিকুল শমসের ও তরিকুল শমসের দীর্ঘদিন ধরে ভৈরব নদীর অর্ধশত বিঘারও বেশি জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দখলদারিত্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কৃষকদের নদীতে নামতে পর্যন্ত বাধা দেওয়া হচ্ছে। ভৈরব নদীর পাড় ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে পাকা প্রাচীর, যাতে সাধারণ মানুষ নদীমুখী হতে না পারে। 

বিজ্ঞাপন

এলাকার মানুষের ভাষ্য, এটি কোনো সাধারণ জমি দখল নয় বরং এটি একটি সংঘবদ্ধ ও রাজনৈতিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের প্রকাশ্য তাণ্ডব। স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে যাওয়ার পরও এ ভূমিদস্যুদের দাপট কমেনি। রীতিমত নদী দখল করেও রিলাক্সে আছেন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এসব নেতারা। 

মঙ্গলবার (২০ মে) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঘোপপাড়া ও সাদিকপুর গ্রামের ভৈরব নদীর দুই পাড়জুড়ে শস্যখেত। কিন্তু তা কোনো কৃষকের না বরং প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের কবজায় রয়েছে সেই শস্যখেত। 

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের ছায়ায় দলটির নেতা রাশেদ ও তার ভাইয়েরা বছরের পর বছর ধরে নদীর এ জমিগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। প্রতিবাদ করলেই হুমকি, মামলা, হয়রানি করা হয়।

স্থানীয় কৃষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নদীর দুই পাড় পুরো দখলে। আমরা নদীতে নামতেই পারি না। ব্রিজের পাশে দেয়াল তুলে দিয়েছে, যেন এ এলাকার কৃষকরা একফোঁটা পানিও না পায়। এটা কি স্বাধীন দেশে সম্ভব?

IMG_20250515_124841

বিজ্ঞাপন

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সর্দার বলেন, তারা শেখ মুজিবের ম্যুরাল বানিয়ে কলেজের নাম ব্যবহার করে নদী ও সরকারি জমি দখল করে নিচ্ছে। কলেজ সরকারি করার পেছনেও ছিল রাজনৈতিক প্রভাব। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন আবার নতুন করে দখল শুরু করেছে শফিকুল। এমনকি সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জমিও রেহাই পাচ্ছে না এই চক্রের হাত থেকে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, আমার কেনা জমির নিচে নদীর জায়গা ছিল। সেটি দখল করে তাতে ছাতা স্থাপন করেছে শফিকুল। এখন সে আমার জমিতেও প্রাচীর তুলছে। আমি আদালতে গিয়েছি, ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। তবুও এ চক্রের কাজ থামেনি। এটাই কি আইনের শাসন?

অভিযোগের বিষয়ে রাশেদ শমসেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও শফিকুল শমসের ছাতা নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। 

তিনি বলেন, ‘এটা স্থায়ী কিছু না। চাইলে ভেঙে দেবো।’ 

এ সময় নজরুল ইসলামের জমি দখলের অভিযোগ তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কুমার দাস বলেন, নদীর জায়গা দখল করে চাষাবাদ করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা দ্রুতই লোক পাঠিয়ে তালিকা করবো। যদি নদী দখল করার ঘটনা ঘটে থাকে তবে তা উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেবো।

আরটিভি/এমকে

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission