জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কার করে মূল ডিজাইন অনুসরণ করে সৌন্দর্য বর্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম।
বুধবার (১৮ জুন) জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া এই ভাস্কর্যটি কবির একটি গানের নামানুসারে তৈরি হয়েছিল এবং এটি স্থাপন করা হয় বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ও পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানের পুকুরপাড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চার কোটির বেশি ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুর গুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবেই নির্মিত হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি। তবে ৫ আগস্ট প্রশাসনিক পটপরিবর্তনের পরেই বিক্ষুব্ধ জনতা এই দুটি হাতের ভাস্কর্যের আঙুল ভেঙে ফেলেছিল। এরপর থেকেই এই ভাস্কর্যটি প্রশাসনিক ভাবে ভেঙে ফেলার দাবি উঠেছিলো। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন প্রশাসন ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের সামনের পুকুরে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়।
এদিকে কতিপয় শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নজরুল এর কর্ম তুলে ধরার একটি প্রয়াস ভাস্কর্যটি। মৃদু স্বরে সাউন্ড সিস্টেমে সেখানে গান বাজার কথা, জানামতে সেটারও বাজেট হয়েছে। এখন ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেই ম্যুরালটি। এই ম্যুরালটি ভাঙায় নজরুলের কর্ম-প্রচারণার প্রয়াসকে যেমন ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে।
অঞ্জলি লহ মোর ভাঙার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান এর নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অঞ্জলি লহ মোর ভাস্কর্যটি
শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এটা ভাঙা হয়েছে। এছাড়াও তৎকালীন উপাচার্যের সময় এই পুকুরে একটি ভাসমান ঘর ছিল যা ড্রাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঘরটির ড্রামগুলো ফুটো হয়ে যাওয়ার ফলে এবং পুকুর সংস্কার করার জন্য তা ভেঙে ফেলা হয়।
এ বিষয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কতিপয় শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল ভাস্কর্যটি ভেঙে মূল ডিজাইনে করার জন্য।
এ বিষয়ে ডেপুটি প্লানিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানতে পেরে ভেঙে ফেলার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া ভাস্কর্যটি সংস্কারের মাধ্যমে সৌন্দর্য বর্ধনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
আরটিভি/এএএ