১৮ বছরেও হয়নি এমপিও, জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভোমরদহ-ধর্মচাকী (বিডি) মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিদ্যালয়টি এমপিও হয়নি। অন্যদিকে নতুন ভবন না হওয়ায় জরাজীর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। ফলে একদিকে শিক্ষকরা যেমন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠ গ্রহণ করছে।
জানা গেছে, ২০০১ সালে ধর্মচাকী ও ভোমরদহ দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন ধর্মচাকী গ্রামের এখলাছুর রহমানসহ এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগী।
এখলাছুর রহমান নিজেই বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৯০ জন। শিক্ষক ও কর্মচারী মিলে রয়েছেন ১৮ জন।
বিদ্যালয়টি শুরুর পর স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির আর্থিক সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয় একটি আধপাকা ভবন। ভবনটিতে কক্ষ রয়েছে রয়েছে আটটি। যার ছাউনি বাঁশ ও টিন দিয়ে তৈরি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বিগত তিন বছর ধরে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ হয় বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে খেলাধুলা ও অন্যান্য প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করে বিদ্যালয়টি। সম্প্রতি উপজেলা পর্যায়ের জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছ। এত সফলতার পরেও বিদ্যালয়টি অবহেলিত থাকায় শিক্ষক ও এলাকাবাসী হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা এই বিদ্যালয়টির উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
প্রধান শিক্ষক এখলাছুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ভবনের ছাউনির টিন গত বছর কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে শিক্ষকদের পকেটের টাকায় তা কোনোরকমে মেরামত করা হয়। ক্লাসে বসেই আসমান দেখা যায়। রোদ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করে থাকে। শিক্ষকদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট কক্ষ নেই। মেয়েদের জন্য নেই কমন রুম।
তিনি আরও বলেন, আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এলাকার মধ্যে লেখাপড়ার মানের দিক থেকে অন্যতম। এখানে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী দরিদ্র পরিবারের। ফলে সামান্য বেতন দিয়েই তারা লেখাপড়া করে। এতে শিক্ষকদের জীবন-যাপন অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার যদি বিদ্যালয়টির প্রতি সুদৃষ্টি দেয় তাহলে এই এলাকার মানুষের খুবই উপকার হয়।
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রসুল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, বিদ্যালয়টির শিক্ষার মান অনেক ভালো। এর উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ পাল বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন ও এমপিওভুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।
জেবি
মন্তব্য করুন