মানিকগঞ্জে আগামীকাল থেকে কঠোরভাবে লকডাউন পালনের সিদ্ধান্ত
মানিকগঞ্জের ঢিলেঢালা লকডাউনকে কঠোরভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজ রোববার (১৭ মে) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি সব কর্মকর্তা, কর্মচারীকে কর্মস্থলে থাকতে হবে। এতদিন কিছুটা ছাড় দিলেও এখন আর তা বরদাস্ত করা হবে না। সোমবারের মধ্যে কোনও সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী কর্মস্থলে উপস্থিত না হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলার বাইরে থেকে জনসাধারণের ঢোকা এবং বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। জেলার প্রতিটি প্রবেশ মুখে পুলিশের চেক পোস্ট বসানো হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ জেলায় ঢুকতে পারবে না এবং বেরও হতে পারবেন না।
আর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে খাদ্য, ওষুধ, জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্যকোনও যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার ফেরি রুটেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনার পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ওষুধ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, খাবারের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
এদিকে, ঈদ উপলক্ষে দোকান খুলে দিতে দোকান মালিকদের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দোকান কর্মচারীদের খাদ্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল থেকে মানিকগঞ্জ জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। প্রথম কয়েকদিন কড়াকড়ি থাকলেও ধীরে ধীরে তা শিথিল হয়ে পড়ে। ঈদ উপলক্ষে ১০ মে শর্তসাপেক্ষে বিপণী বিতান, মার্কেট খুলে দেয়া হয়।
তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখাসহ শর্ত ভঙ্গ করায় ৩ দিন পর আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দোকানের শাটার বন্ধ করে বেচা-কেনার অপরাধে জেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক দোকানিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়।
এদিকে গণ-পরিবহন চালু না থাকলেও বিকল্প পথে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন গাড়িতে চলাফেরা অব্যাহত রাখে। জেলা শহরেও অপ্রয়োজনে অযথা মানুষকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। সবদিক বিবেচনা করে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ঢিলেঢালা লকডাউনকে কঠোরভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। মারা গেছেন একজন। আর সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন।
এজে
মন্তব্য করুন