করোনায় কিভাবে কাজ করতে পারে যক্ষ্মার পুরোনো টিকা
বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস সার্স-সিওভি-২ এর এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়িয়ে রেসপিরেটরি লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখতে শতবর্ষী যক্ষ্মার টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন বেশ কয়েকটি দেশের বিজ্ঞানীরা। খবর ইউএস নিউজের।
১৯২০-র দশকে যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৈরি করা ব্যাকিলাস ক্যালমেট-গেরিন (বিসিজি) টিকা নভেল করোনাভাইরাসের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত যে রোগ হয়, তা প্রতিরোধে কার্যকর কিনা সেটি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের গবেষকরা। কোভিড-১৯ এর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দুটি গ্রুপ- স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও বয়স্কদের ওপর এটির ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালানো হচ্ছে।
যক্ষ্মার টিকা কিভাবে অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে সাহায্য করে?
বিসিজি টিকায় জীবন্ত কিন্তু একটি যক্ষ্মার ব্যাকটেরিয়া থাকে যা যক্ষ্মার ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করতে একটি অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই ব্যবস্থাকে একটি অ্যাডাপ্টিভ ইমিউন রেসপন্স বলে। এর মাধ্যমে শরীর একটি নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বেশিরভাগ ভ্যাকসিন একক প্যাথোজেনের জন্য একটি অ্যাডাপ্টিভ ইমিউন রেন্সপন্স তৈরি করে।
অন্যান্য টিকার মতো বিসিজি টিকাও ইননেট ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, শরীরের এই ফার্স্ট-লাইন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেহে বিভিন্ন ধরনের প্যাথোজেন বা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। গিনি-বিসাউয়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য শিশুদের তুলনায় বিসিজি টিকা নেয়া শিশুদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কম। এটা খুব বড় একটা পার্থক্য। কিছু কিছু গবেষেণায় তরুণ ও বয়োবৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রজনিত সংক্রমণের ক্ষেত্রেও এমন ফলাফল দেখা গেছে।
বিজ্ঞানীরা যা এখনও জানেন না
করোনাভাইরাস বা সার্স-সিওভি-২ এর বিরুদ্ধে বিসিজি টিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে কোনও তথ্য নেই। আবার বিসিজির অনেক ধরনের টিকাও রয়েছে, যক্ষ্মার বিভিন্ন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে একেকটির ক্ষমতাও ভিন্ন ভিন্ন। বিসিজির কোন টিকা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইননেট ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলবে সেটিও খুজে বের করতে হবে বিজ্ঞানীদের।
এই মুহূর্তে কাদের বিসিজি’র টিকা নিতে হবে?
কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিসিজির পরীক্ষামূলক ফলাফল পেতে বিজ্ঞানীদের আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। তাই এটি নেয়ার জন্য এখনই সবার দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করা উচিত নয়। কারণ এটা পূর্ণ বয়স্ক মানুষজনের ওপর এখনও পরীক্ষা করা হয়নি এবং ক্ষতিকরও হতে পারে। তাছাড়া কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিসিজি টিকা দিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা চালাতে গেলে যেসব শিশুর এই টিকা নেয়া দরকার তাদের জন্য স্বল্পতা দেখা দেবে।
এ/পি
মন্তব্য করুন