• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

চীনের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধলে কতটা প্রস্তুত ভারত?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২৮ মে ২০২০, ১৫:৫১
srtrength of the three wings of indian military
আনন্দবাজার থেকে নেয়া

ডোকলাম নিয়ে ভারত ও চীন বিবাদ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। সে সময় কূটনৈতিক স্তরে সমঝোতা হয়েছিল দুইপক্ষের। এরপর কেটে গেছে তিন বছর। এবার লাদাখসহ একাধিক সীমান্ত এলাকায় দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত। সীমান্তে সংঘাতের এই বাতাবরণ ঘিরেই উত্তেজনা বাড়ছে দিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে। পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেয়ায়। চীনকে টক্কর দিতে কতটা তৈরি ভারত? এক নজরে দেখে নেয়া যাক ভারত বিপুল অস্ত্র সম্ভার। খবর আনন্দবাজারের।

ভারতের স্থলবাহিনী খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেনা রয়েছে ১২ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি। এছাড়া সংরক্ষিত বাহিনী রয়েছে ৯ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি।

অটোম্যাটিক কালাশনিকভ সিরিজের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ছাড়াও, ভারতের হাতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রের সম্ভার। তার মধ্যে রয়েছে টি ৯১ অ্যাসল্ট রাইফেল, কার ৮১৬, টিআরজি এম ১০, এম ২৪৯, বিভিন্ন মডেলের মেশিন গানসহ বহু আগ্নেয়াস্ত্র।

সম্মুখ সমরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ট্যাংক। ভারতের হাতে রয়েছে অর্জুন, টি ৯০ ভীষ্ম, টি ৭২ অজেয়-এর মতো মেন ব্যাটল ট্যাংক। এছাড়া রয়েছে টি ৫৫ ও বৈজয়ন্ত ট্যাংক। এ দেশে মোট ট্যাংকের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯৭৮টি। বিপক্ষের ট্যাংক ধ্বংস করার জন্য ভারতের হাতে রয়েছে নাগের মতো বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র।

এছাড়া রয়েছে মেশিনগানবাহী গাড়ি। রয়েছে সাঁজোয়া গাড়ি। রয়েছে মাইনের মতো বিস্ফোরক সাফ করার যানও। রয়েছে মাইন বসানোর যানও। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আহতদের উদ্ধার করার জন্য তালিকায় রয়েছে আর্মার্ড অ্যাম্বুল্যান্সও। ভারতের হাতে রয়েছে ডিআরডিও-র তৈরি করা ২টি অ্যাডভান্সড টাওড আর্টিলারি সিস্টেম।

ভারতের হাতে রয়েছে ১৪৫টি এম ৭৭৭ হাউইৎজার কামান। সেগুলো ২৪ থেকে ৩০ কিমি দূরে গোলাবর্ষণ করতে সক্ষম। এছাড়া রয়েছে এম ৪৬ হাউইৎজার কামান, হুবিটস হাউইৎজার কামান ও ডি ৩০ হাউইৎজার কামান। সেগুলোর সংখ্যা সবমিলিয়ে ১৮৬০টি। রয়েছে ধনুষ গোত্রের হাউইৎজার কামানও।

সেনাবাহিনীতে এমকে সিরিজের ফিল্ড গান রয়েছে ১৭০০টি ও হালকা ফিল্ড গান রয়েছে ৭০০-র বেশি। ভারতের হাতে রয়েছে পিনাকা ও বিএম ২১ গোত্রের রকেট লঞ্চার সিস্টেম। সব মিলিয়ে সেই সংখ্যাটা ২০০-র বেশি।

ভারতের যুদ্ধাস্ত্র সম্ভারের মধ্যে রয়েছে অমোঘ, নাগ, মিলান ২টি, কোমেলসহ বিভিন্ন রকমের অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইল।

ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে অনেকটা এগিয়ে গেছে ভারত। একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে ভারতের। এর মধ্যে অগ্নির সর্বোচ্চ পাল্লা নিয়ে ইতোমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেইজিং। পাঁচ থেকে আট হাজার কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম অগ্নি ৫। এটা অন্তর্মহাদেশীয় গোত্রের মিসাইল। এছাড়া রয়েছে ব্রহ্মস ও কে সিরিজের বিভিন্ন পাল্লার মিসাইল। রয়েছে অরিহন্ত গোত্রের সাবমেরিন থেকে ছোড়া যায় সাগরিকা নামের ক্ষেপণাস্ত্রও।

এছাড়া পৃথ্বী সিরিজ, প্রহার, নির্ভয়ের মতো নানা পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে ভারতের। বিভিন্ন রকমের ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম রয়েছে ভারতের হাতে। রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে ছোড়ার বিপুল ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভারও। রয়েছে অ্যান্টি এয়ারক্র্যাফ্ট আর্টিলারিও।

স্থলের যুদ্ধের মতো আকাশ যুদ্ধের জন্যও বিপুল সম্ভার মজুত ভারতের হাতে। রয়েছে অ্যাপাশে, হ্যাল রুদ্র, হ্যাল ধ্রুব, হ্যাল লাইট কমব্যাট অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এছাড়া রয়েছে প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য একাধিক কপ্টার।

নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি হ্যাল চিতা, ল্যান্সার, চেতক ও চেতনের মতো কপ্টার রয়েছে ভারতের কাছে। ঝুলিতে রয়েছে একাধিক আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকলও। ভারতের ঝুলিতে রয়েছে ইসরায়েল থেকে আনা ফ্যালকন রাডার। এছাড়া রয়েছে ইন্দ্র, রাজেন্দ্র, স্বাতী, রোহিণীর মতো অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেমও।

ডগফাইট হোক বা বোমাবর্ষণ, ভারতের বিমানবাহিনীতে রয়েছে বিভিন্ন অত্যাধুনিক বিমান। রয়েছে মিগ সিরিজের ১১৯টি বিমান। সুখোই ৩০ রয়েছে ২৭২টি। রয়েছে ৫১টি মিরাজ। এছাড়া ১০৬টি জাগুয়ার ও হ্যাল তেজস রয়েছে ৫১টি। সবমিলিয়ে বিমানের সংখ্যা ৫৪৮টি। তবে এর বাইরেও পরিবহন, এয়ারলিফট ইত্যাদির জন্য রয়েছে বেশ কিছু বিমান।

ফ্রান্স থেকে ইতোমধ্যেই ভারতের হাতে এসে পৌঁছেছে তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান। এছাড়া বিভিন্ন রকম যুদ্ধাস্ত্র মালপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া, বাহিনী নিয়ে যাওয়া ও নজরদারির জন্য বিভিন্ন বিমান রয়েছে। রয়েছে ১১টি সুপার হারকিউলিস ও ১১টি গ্লোবমাস্টারের মতো অত্যাধুনিক বিমানও।

আইএনএস অরিহান্ত ও আইএনএস চক্র নামে দুটি পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন রয়েছে ভারতের। ভারতেই তৈরি হয়েছে আইএনএস অরিহান্তের মতো পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন। এটাই সবচেয়ে বড় সাবমেরিন।

রাশিয়ার থেকে লিজে নেওয়া আইএনএস চক্র। ভারতের হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক স্করপেন গোত্রের অ্যাটাক সাবমেরিন। ভারতের নৌবহরে রয়েছে ১৪টি সাধারণ সাবমেরিন। এগুলো ডিজেল-ইলেকট্রিক প্রযুক্তিতে চালিত। তার মধ্যে রয়েছে সিন্ধুঘোষ, শিশুমারের মতো অ্যাটাক সাবমেরিন।

নৌবহরে রয়েছে বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য। নৌবহরে মিসাইল ডেস্ট্রয়ার রয়েছে ১০টি। এছাড়া নজরদারি, পাহারা ইত্যাদির জন্য ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের জাহাজ রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার। রয়েছে উভচর যুদ্ধজাহাজও।

শুধু পরমাণু বোমাই নয়, হাইড্রোজেন বোমা তৈরির প্রযুক্তি রয়েছে ভারতের হাতে। জানা গেছে, ১১০টির মতো পরমাণু বোমা রয়েছে ভারতের হাতে। স্থল, জল ও আকাশ, এই তিনটি জায়গা থেকেই বিভিন্ন লক্ষ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে সক্ষম ভারত। তবে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতের নীতি হলো, নো ফার্স্ট ইউজ। অর্থাৎ প্রথমেই পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নয়। প্রতিপক্ষ ওই অস্ত্র ব্যবহার করলে তবেই জবাব দেবে ভারত। ডিআরডিও-র তৈরি করা অগ্নি সিরিজের সব ক্ষেপণাস্ত্রই নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বা পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম।

ভারতের হাতে রয়েছে অ্যান্টি স্যাটেলাইট মিসাইলের মতো উন্নততমর অস্ত্রও। এই রকম উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন নিয়ন্ত্রিত (গাইডেড) ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মহাকাশে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করা যায়। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারতের কাছে এই প্রযুক্তি রয়েছে। ২০১৯ সালে অ্যাস্যাট ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা করে ভারত।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি তেমন কেনেন না : রিজভী
ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে দ্বন্দ্ব!
বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচির কারণ জানালেন নাছিম
ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার
X
Fresh