• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
logo

ইসলামী ব্যাংকে থাকা এস আলমের ৮ সহযোগী বরখাস্ত

আরটিভি নিউজ

  ১৯ আগস্ট ২০২৪, ২১:৪০
ইসলামী ব্যাংক
সংগৃহীত

এস আলম গ্রুপের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ইসলামী ব্যাংকের পাঁচ ডিএমডিসহ আট শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নানা অনিয়ম ও বেনামে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে এই আট কর্মকর্তা জড়িত বলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি।

সোমবার (১৯ আগস্ট) ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ তালিকায় রয়েছেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ (এএমডি), উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আকিজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সাব্বির, মিফতাহ উদ্দিন, মো. রেজাউল করিম ও ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া প্রধান অর্থপাচার প্রতিরোধ কর্মকর্তা তাহের আহমেদ চৌধুরী ও আইবিটিআরএ প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলাম।

আর আগে রোববার (১১ আগস্ট) সকালে রাজধানীতে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যাংকটির ৪ জন কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের গোডাউন গার্ড (ডিজি) শফিউল্লাহ সরদার, অফিসার মামুন, আব্দুর রহমান ও বাকী বিল্লাহ।

ওই দিন কয়েক শ’ বহিরাগত জোর করে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের প্রবেশে বাধা দিলে কর্মকর্তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়।

ইসলামী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সকালে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে কয়েক শ’ বহিরাগত অবস্থান নেন। তারা জামানতবিহীন, অনিয়ম করে লোন কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। হঠাৎ এস আলম গ্রুপের হয়ে কাজ করা কয়েকজন কর্মকর্তাসহ প্রায় শতাধিক লোক অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদেরকে বাধা দিলে অস্ত্রধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি করেন। তাদের গুলিতে চার কর্মকর্তা আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। পরে উপস্থিত কর্মকর্তারা পাল্টা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।

গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে কায়সার আলী পদত্যাগ করেন।

এদিকে, ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে চিঠি দিয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পরিচালক ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে তহবিল লুটপাটের বিভিন্ন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় গণমানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বরাবর এ চিঠি পাঠিয়েছেন তারা।

সর্বস্তরের কর্মীদের পক্ষ থেকে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের এসইভিপি এএসএম রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেশের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। ব্যাংকটির বোর্ড অব ডিরেক্টরস ও কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ব্যাংকের তহবিল লুটপাটের কিছু চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বাস্তব অবস্থা এর চেয়েও ভয়াবহ। দীর্ঘদিন এই লুটপাটের ধারা অব্যাহত থাকার কারণে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং ব্যাংকটির প্রতি গণমানুষের আস্থা সংকট দেখা দিয়েছে।

এতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার, ব্যাংকের স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা, তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করার জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন ৪৭ ধারা মোতাবেক ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত, ইসলামী ব্যাংকের প্রতি সহানুভূতিশীল বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অথবা প্রয়োজনে প্রাক্তন পরিচালকদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক ব্যক্তির সমন্বয়ে বোর্ড পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার আশু পদক্ষেপ কামনা করছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট এস আলমের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর গত ৭ ও ৮ আগস্ট ব্যাংকারদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর হওয়া পদায়ন পাওয়া এক্সিকিউটিভসহ (নির্বাহী কর্মকর্তারা) অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া সবার নিয়োগ বাতিলের দাবি তোলেন তারা। এ অবস্থায় গত বুধবার এস আলমের আমলে পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কায়সার আলী ব্যাংকে এলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

কর্মকর্তারা ইসলামী ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লুটেরাদের বের করে দেওয়ার দাবি জানান। বিশেষ করে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল মাওলা, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাউসার আলী, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিনসহ এস আলমের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন তারা।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • চাকরি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনাও কোটিপতি!
এস আলমের সব সম্পত্তি জব্দ চেয়ে আইনি নোটিশ
২২০ কোটি টাকা তুলে নিল এস আলম
ঢাকার মীর গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই চট্টগ্রামের মীর গ্রুপের