• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনা প্রতিরোধে ফুসফুস সুস্থ রাখতে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১৫ মে ২০২০, ১৬:২৩
What to do to keep the lungs healthy to prevent corona
ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে মহামারি রূপ নিয়েছে কোভিড-19 করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনাভাইরাসের সাধারণ উপসর্গ হল জ্বর, সর্দি, কাশি, হাঁচি বা গলাব্যথা। শেষ পর্যন্ত এই ভাইরাস ফুসফুসে আঘাত হানে। এতে রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এমনকি এতে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি বলেছেন, যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা বিশেষভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাবৃদ্ধির দিকে নজর দেবেন। সবসময় মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকবেন ভেঙে পড়লে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে যায়, এজন্য রীতিমতো ফুসফুস ও শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে। কারণ অনেক সময় কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। এজন্য নিয়মিতভাবে শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে। গভীরভাবে শ্বাস নেয়া ও শ্বাস ছাড়া এ প্রক্রিয়াতেও ফুসফুসের ব্যায়াম করা সম্ভব। কাজেই এভাবে ব্যায়াম করে ফুসফুসকে সক্রিয় রাখবেন। বেশি করে তরল খাবার খাবেন পানিও খাবেন। মৃদু কুসুম গরম পানি ব্যবহার করবেন সাথে আদা চা এবং মসলা চাও পানি দিয়ে গার্গল করে সে পানি খেতে পারবেন এভাবে উপকার পাওয়া যাবে।

শুধু করোনাভাইরাসই নয় অন্য যেকোনও রোগ থেকে বাঁচতে হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তুলতে তো হবেই। কিছু শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। দ্রুত হাঁটা ও সাঁতার কাটার মতো শারীরিক ব্যায়াম যেমন হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে, তেমনি শ্বাস ব্যায়ামে ফুসফুসকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

ব্রিটিশ লাং ফাউন্ডেশনের মতে, গভীর শ্বাস ব্যায়াম নিউমোনিয়ার পর ফুসফুস থেকে শ্লেষ্মা দূর করে অধিক বায়ু সঞ্চালনে সাহায্য করতে পারে। এ ব্যায়াম করতে ৫-১০ বার গভীর শ্বাস নিতে হবে। তারপর কয়েক বার জোরে কাশি দিয়ে রিপিট করতে হবে। এতে ফুসফুস আরও শক্তিশালী হবে।

করোনা প্রতিরোধে ফুসফুস সুস্থ রাখতে যা করবেন

শ্বাসের ব্যায়াম
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে ডায়াফ্রাগমাটিক ব্রিদিং, পার্শড লিপস ব্রিদিং ইত্যাদির অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে ফুসফুসের পেশি শক্ত হওয়ার পাশাপাশি এর বাতাস ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে। এছাড়া শ্বাস নেয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে গভীরভাবে শ্বাস নেয়া যা সবচেয়ে সহজও। প্রতিদিন ‘‘ইয়োগা’’ বা যোগব্যায়াম করাও এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পারে।

নিয়মিত শরীরচর্চা
সব ধরনের শরীরচর্চাই শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়ানোসহ ফুসফুসের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য নিয়মিত সাঁতার কাটা, দৌড়ানো, ট্রেকিং ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করা দরকার।

এইতো গেলো ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ানো উপায় তবে ব্যায়াম ছাড়া ফুসফুসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এর সুরক্ষায় কিছু করণীয় আছে। দেখে নিন সেগুলো-

প্রচুর পানি পান
শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে পানির ভূমিকা অপরিসীম। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে শরীরে রক্ত চলাচলের মাত্রা বাড়ে এবং ফুসফুস আর্দ্র ও ভালো থাকে। তাই ফুসফুসকে ভালো রাখতে প্রচুর পানি পান করা উচিত।

বসার ভঙ্গি
আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স-এর গবেষণা অনুযায়ী সোজা হয়ে না বসে শরীর কুঁচকে বা দুমড়ে মুচড়ে বসলে কিংবা সারাক্ষণ আধশোয়া হয়ে বসলে ফুসফুসকেও কুঁকড়ে রাখে ও দীর্ঘদিন এমন অভ্যাস বজায় রাখলে তা ফুসফুসের খাঁচাকে ছোট করে দেয়।

রসুন, পেঁয়াজ খাওয়া
অনেকসময় বিরক্তিকর মনে হলেও কড়া গন্ধযুক্ত খাবার যেমন রসুন, পেঁয়াজ ইত্যাদি খেলে দেহে তা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে যা ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টিতে বাধা দেয়। তাই নিয়মিত এসব মশলাজাতীয় খাবার খাওয়া যেতে পারে।

ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় ফল খাওয়া
প্রতিদিন লেবুজাতীয় ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এধরনের ফলে থাকে ভিটামিন ‘সি’ যা ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহে সাহায্য করে। এছাড়া, অন্যান্য খাবার যেমন- ক্যাপসিকাম, বাদাম, আদা, কুমড়া, গাজর, দুধ ফুসফুসের প্রদাহ ও রোগ প্রতিরোধ কার্যকর।

এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে ফুসফুসকে ভালো রাখতে

- বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। বাড়ির ছাদে ফুলের টবে গাছ লাগিয়ে হলেও এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া যায়।

- নিয়মিত ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস থাকা জরুরি। বাড়িঘর থেকে গুমোটভাব দূর করতে হবে।

- মাঝে মাঝে লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে উঠলে পুরো দেহে রক্ত সঞ্চালিত হয়। এতে হৃৎপিণ্ডের পাশাপাশি ফুসফুসেরও কার্যক্ষমতা বাড়ে।

- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পারিবারিকভাবে ফুসফুস ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে।

- ধূমপান থেকে বিরত থাকা ও শারীরিক সক্রিয়তায় যুক্ত থাকা। আপনার দৈনন্দিন কাজের সময় শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, শ্বাসক্রিয়ার সময় ব্যথা ও দীর্ঘদিন বিদ্যমান কাশির মতো ফুসফুসীয় অসুস্থতার উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ফুসফুস সমস্যার চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি শুরু করবেন তত বেশি ফল পাবেন।

ফুসফুসের কাজ অবিরাম চলতে থাকে, কখনোই এর বিশ্রাম নেই। এই সুন্দর পৃথিবীতে ভালোভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকতে হলে ফুসফুসের সুস্থতা অপরিহার্য। তাই চলুন ফুসফুস সুরক্ষিত রাখতে একটি সুস্থ জীবনধারার অভ্যাস গড়ে তুলি এবং নিজের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নানান জটিলতা থেকে মুক্ত রাখি।

এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তরমুজের সঙ্গে বা পরে খাবেন না যেসব খাবার
হার্টের রিংয়ের নতুন দাম নির্ধারণ, পাওয়া যাবে যত টাকায়
অভিনেতা পার্থসারথি দেব আর নেই
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
X
Fresh