মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠাবে বাংলাদেশ

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ০১:১১ এএম


মিয়ানমার, বিজিপি, সেনা সদস্য
ছবি : বিবিসি

মিয়ানমারের রাখাইনে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাত থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশসহ (বিজিপি) বিভিন্ন সংস্থার ৩২৯ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তাদের বঙ্গোপসাগর দিয়ে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সভাপতিত্বে মিয়ানমারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে যুক্ত ছিলেন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নাফ নদ হয়ে মিয়ানমার তাদের বাহিনীর লোকদের ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল। তবে তাতে আপত্তি জানায় বাংলাদেশ। কারণ নাফ নদ দিয়ে ফেরত পাঠানোর সময় আরাকান আর্মি যদি হামলা চালায়, আর তাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটলে, তাহলে তার দায় বাংলাদেশকেও নিতে হবে। তাই বিকল্প পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাদের আকাশপথে ফেরত পাঠানোর বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমার সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এখন সমুদ্রপথে তাদের ফেরত পাঠানো হবে বলে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। এর আগে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আশা করা যায়, কয়েক দিনের মধ্যেই মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের ৩২৯ নাগরিককে কীভাবে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে, সেটাই আমাদের আলোচ্য বিষয় ছিল। আলোচনায় মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত যুক্ত ছিলেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আজ (বুধবার) তিনি দেখা করেছেন। সেখানে সীমান্তের ঘটনাবলির প্রতিবাদ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই সঙ্গে যারা এখানে আছেন, তাদের কীভাবে ফিরিয়ে নেবে– সেটা জানতে চেয়েছেন তিনি। আমরা তাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আকাশপথকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম। তারা সমুদ্র দিয়ে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী।

পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করছি। আমাদের সঙ্গে তাদের নেপিদোতে, ঢাকায় সবখানেই  যোগাযোগ আছে। এই মুহূর্তে কোনো ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ দেখছি না।

তিনি বলেন, সবাইকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট যেন আমাদের না পোহাতে হয়– সেটাই আমাদের কাম্য। সেখানকার সংঘাতে এখানে প্রচুর মর্টার শেল পড়ছে, দু’জন মারা গেছেন। সীমান্তে উত্তেজনা ও ভয়ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে, সেটারও অবসান চাই। প্রত্যাবাসন ব্যাহত হচ্ছে। নতুন করে আর রোহিঙ্গা নিতে চাই না।

রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে কিনা– এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরাসরি কোনো ঝুঁকি দেখছি না। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন। এমন কোনো কিছু করব না, যাতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। বিজিবির সর্বোচ্চ প্রস্তুতি আছে, যাতে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission