দেশের বাইরে দেশের মাটি

মাজহার খন্দকার

সোমবার, ০৪ জুলাই ২০১৬ , ০১:০১ পিএম


দেশের বাইরে দেশের মাটি

বহু বছর আগে যখন দেশের বাইরে থাকতাম তখন কয়েক বছর পর একবার দেশে আসার সুযোগ হতো। যখন ফিরে যাওয়ার সময় হতো তখন মনটা ভারী হয়ে থাকত। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হতো যখন প্লেনটা আকাশে ওড়ার জন্য রানওয়েতে ছুটতে থাকত। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতাম, প্লেনের চাকা যখন মাটি ছেড়ে ওপরে উঠে আসত তখন এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করতাম, জানতাম না আবার কবে দেশের মাটিতে পা রাখতে পারব।

এখনো মাঝেমধ্যে দেশের বাইরে যেতে হয়, প্লেন রানওয়েতে ছুটতে ছুটতে একসময় মাটি ছেড়ে আকাশে উঠে যায়, প্রতিবারই আমার সেই পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে এবং নিজের ভেতর এক ধরনের বিস্ময়কর আনন্দ হয় যে আমাকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সেই তীব্র কষ্ট অনুভব করতে হয় না। আমি জানি অল্প কদিনের ভেতর আবার দেশের মাটিতে ফিরে আসব। বহুদিন থেকে দেশে আছি, অসংখ্য মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, তাই প্লেনের ভেতরেও পরিচিত মানুষ পেয়ে যাই। আমাদের ইউনিভার্সিটি প্রায় মাসখানেকের জন্য ছুটি। তাই দেশের বাইরে যাচ্ছি। প্লেনে হঠাৎ করে একজনের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, মানুষটি সম্পর্কে আলাদা করে বলার লোভ সামলাতে পারছি না।

বিজ্ঞাপন

প্লেনের ভেতরে নিজের সিটে বসার জন্য যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন মানুষটি আমাকে বলল, ‘স্যার, আমার নাম সাইফুল্লাহ; অনেক দিন আগে জার্মানি থেকে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম।’

আমার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল, একজন বহুদিন আগে জার্মানি থেকে আমার কাছে ই-মেইল পাঠালে আমি তাকে চিনে ফেলব-সে রকম কোনো সম্ভাবনা নেই। কিন্তু মানুষটির পরের কথাটি শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমার তার কথা মনে পড়ে গেল। মানুষটি বলল, ‘জার্মানিতে আমার একটা কোম্পানি আছে, নাম সাইন পালস। আমি সেই কোম্পানির সিইও।’ আমি তখন বিস্ময় নিয়ে তার দিকে তাকালাম, কম বয়সী একজন তরুণ। একজন কোম্পানির সিইও বলতেই টাই-স্যুট পরা মধ্যবয়স্ক ভারিক্কী চেহারার একজন মানুষের চেহারা ভেসে ওঠে, সাইফুল্লাহ মোটেও সে রকম একজন নয়। টি-শার্ট পরে থাকা কম বয়সী হাসিখুশি একজন তরুণ।

আলাদাভাবে এই তরুণের কথা আমার মনে আছে। কারণ জার্মানিতে সাইফুল্লাহ নিজে একটি কোম্পানি দিয়েছে, যে কোম্পানিতে জার্মান ও বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে। তারা নানা ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে, জার্মানির মতো দেশে যন্ত্রপাতি তৈরি করে সেই দেশে সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করার কাজটি সহজ নয়।

আমরা ছোট-বড় সফটওয়্যার কোম্পানি দেখেছি; কিন্তু সত্যিকারের যন্ত্রপাতির কোম্পানি তৈরি করে শুধু টিকে থাকা নয়, সেটাকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলার উদাহরণ খুব বেশি দেখিনি। আমাদের দেশের মোটামুটি সব মেধাবী ছেলেমেয়েই আগে হোক পরে হোক, দেশের বাইরে চলে যায়। তারা দেশের বাইরে চমকপ্রদ কাজকর্ম করে এবং তাদের সাফল্য দেখে আমি একদিকে উৎসাহ পাই, একই সঙ্গে বুকের ভেতর কোথায় যেন চিনচিনে ব্যথা অনুভব করি।

বিজ্ঞাপন

সাইফুল্লাহ যদি শুধু জার্মানিতে অসাধারণ একটা কোম্পানি গড়ে তুলত, আমি তাকে নিয়ে আলাদাভাবে লিখতাম না। বাইরের দেশে যারা সফল তাদের নিয়ে বাইরের দেশের মানুষ গর্ব করুক, আমি দেশের মানুষ নিয়ে গর্ব করতে চাই। আমি সাইফুল্লাহকে নিয়ে গর্ব করতে চাই। কারণ জার্মানিতে সফল একটি কোম্পানি তৈরি করে সে থেমে যায়নি। যে স্বপ্নটি আজীবন লালন করে এসেছে সে শেষ পর্যন্ত সেটি করতে পেরেছে। বাংলাদেশে সে একটা কোম্পানি শুরু করেছে, নাম দিয়েছে (Aplombtech)  এপ্লম্বটেক (এপ্লম্ব শব্দটি একটু অপরিচিত, ইংরেজিতে আত্মবিশ্বাস বলে চালিয়ে দেওয়া যায়, মূল শব্দটি সম্ভবত ব্যালে নাচের সময় নৃত্যশিল্পীর এক পায়ে ঘুরপাক খাওয়ার বিষয়টি)। বাংলাদেশের কোম্পানির জন্য সে একটি ভিন্ন নাম দিয়েছে। কারণ সে বাংলাদেশিদের দিয়ে বাংলাদেশের একটা কোম্পানি তৈরি করতে চায়, জার্মান কোম্পানির অংশ তৈরি করতে চায় না।

সাইফুল্লাহ জার্মানি থেকে তার তিনজন অভিজ্ঞ দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দেশে নিয়ে গিয়ে তাদের নেতৃত্বে কোম্পানি শুরু করেছে। এর মধ্যেই সেটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে, দেশের জন্য কাজ শুরু করেছে, দেশের বাইরেও তার যোগাযোগ শুরু হয়েছে।

প্লেন থেকে নামার পর আমরা দু’জন দুই দেশে যাব, দুটি ফ্লাইটের মধ্যে ঘণ্টাখানেক সময়। কাজেই তার সঙ্গে আমি দীর্ঘ সময় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। কীভাবে সে ও তার স্ত্রী মিলে তাদের কোম্পানিটি গড়ে তুলেছে তার কাহিনীটি অসাধারণ; আমি তার কাছ থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনেছি। ভবিষ্যৎ নিয়ে তার স্বপ্নের শেষ নেই, মানুষের স্বপ্নের কথা শোনা থেকে আনন্দের ব্যাপার আর কী হতে পারে? তরুণ বয়সে এত চমৎকার কাজ করেছে সেটি নিয়ে তার ভেতরে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই। কথাবার্তায় বিস্ময়কর এক ধরনের সারল্য ও বিনয়। নিজের সম্পর্কে অসংখ্যবার যে বাক্যটি ব্যবহার করেছে সেটি হচ্ছে, ‘আমি আসলে গ্রামের ছেলে!’

যে গ্রামের ছেলে, যার শরীরে দেশের মাটির গন্ধ, আমরা আসলে তার কাছেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি!

 ২.

আমি আমস্টারডাম শহরে দ্বিতীয়বার এসেছি। যখন বয়স কম ছিল তখন খুব আগ্রহ নিয়ে দেশ-বিদেশে গিয়েছি, দর্শনীয় জিনিসগুলো দেখেছি, এখন দেশ থেকে বের হতে ইচ্ছা করে না, কোথাও গেলে আর্ট মিউজিয়াম ছাড়া অন্য কিছু দেখারও আগ্রহ হয় না। তবে গতবার আমস্টারডাম শহরে ভিন্ন এক ধরনের একটি মিউজিয়াম দেখার চেষ্টা করেছিলাম। অনেক আগে থেকেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যায় বলে মিউজিয়ামটি দেখা হয়নি। এবার সেটি দেখা হয়ে গেল। এটি হচ্ছে অ্যানি ফ্রাংক নামে ১৫ বছরের একটি কিশোরীর ওপর গড়ে ওঠা একটি মিউজিয়াম।

আমার ধারণা, যারা একটু হলেও লেখাপড়া করেছে তারা সবাই অ্যানি ফ্রাংকের কথা জানে। তার পরও আমি তার সম্পর্কে একটু বলি। মেয়েটির জন্ম জার্মানিতে, ইহুদি ধর্মের মানুষ হওয়ার কারণে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হলে ১৯৪১ সালের পর তাদের কোনো দেশ ছিল না। তার বাবা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আগেই নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরে চলে এসেছেন। একসময় জার্মানি নেদারল্যান্ডসও দখল করে নিল, তখন আবার তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠল। প্রতিদিনই ইহুদিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে, গ্যাস চেম্বারে মেরে ফেলা হচ্ছে। কাজেই নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য অ্যানা ফ্রাংকের বাবা একটি বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁর অফিসের ওপর একটি গোপন কুঠরি তৈরি করে সেখানে পুরো পরিবারকে নিয়ে লুকিয়ে গেলেন। পুরো দুই বছর তারা সেই ছোট কুঠরিতে লুকিয়ে ছিল, যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল সেই ছোট বাসাটিই হচ্ছে অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়াম।

সেই ছোট একচিলতে জায়গায় লুকিয়ে থাকতে থাকতে মেয়েটি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখত। তার খুব বড় লেখক হওয়ার শখ ছিল, সে জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছিল। যে বিষয়টি তাকে সারা পৃথিবীর সব মানুষের কাছে পরিচিত করেছে সেটি হচ্ছে তার ডায়েরি। সেই গোপন কুঠরিতে লুকিয়ে লুকিয়ে সে ডায়েরি লিখত।

টানা দুই বছর সেই গোপন কুঠরিতে লুকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে তারা জার্মানদের হাতে ধরা পড়ে গেল। কেউ একজন তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জার্মানদের কাছে তাদের কথা জানিয়ে দিয়েছিল! যুদ্ধ তখন শেষের দিকে চলে এসেছে, ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সব স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে চুরমার হয়ে গেল।

এই পরিবারের পরের ইতিহাস খুব কষ্টের। পরিবারের পুরুষ থেকে মহিলা সদস্যদের আলাদা করে ফেলা হলো। অনাহারে প্রথমে মা মারা গেলেন অ্যানি ফ্রাংক আর তার বড় বোন বিভিন্ন কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ঘুরে জার্মানির বারগেন বেলসেন ক্যাম্পে এসেছে। অনাহার, রোগ-শোক, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অমানুষিক পরিশ্রম, হতাশা—সব কিছু মিলে তখন তাদের জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছে। ১৯৪৫ সালের এপ্রিল মাসে মিত্রশক্তি এসে এই ক্যাম্পের বন্দিদের মুক্ত করেছে, অ্যানি ফ্রাংক ও তার বোন তার মাত্র দু-তিন সপ্তাহ আগে টাইফাস রোগে মারা গেছে।

 

বেশ কয়েক বছর আগে কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের অতিথি হয়ে জার্মানি গেছি। উদ্যোক্তারা আমার কাছে জানতে চাইলেন আমি জার্মানির বিশেষ কিছু দেখতে চাই কি না। আমি বললাম, সম্ভব হলে বারগেন বেলসেন ক্যাম্পটি দেখতে চাই, যেখানে অ্যানি ফ্রাংক নামে ১৫ বছরের একটা কিশোরী মুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছিল। আমার কথা শুনে জার্মান আয়োজকরা একটু থতমত খেয়ে গিয়েছিল, আমি আগেই লক্ষ করেছি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির ইতিহাসটুকু তারা সযত্নে এড়িয়ে যায়। কিন্তু তারা আমার অনুরোধ রক্ষা করে আমাকে সেই ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিল। অ্যানি ফ্রাংকের কবর আলাদা করে নির্দিষ্ট করা নেই, বিশাল গণকবরের কাছে লেখা আছে অসংখ্য বন্দির সঙ্গে এখানে কোথাও তাকে সমাহিত করা হয়েছিল।

আমস্টারডামে অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামে তার ছোট চিলতে ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমি এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করেছিলাম। যুদ্ধ শেষে অ্যানি ফ্রাংকের বাবা শুধু জীবন নিয়ে ফিরে এসেছিলেন, তাঁর হাতে তখন অ্যানি ফ্রাংকের ডায়েরিটি পৌঁছে দেওয়া হয়। বাবা সেই ডায়েরিটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। অ্যানি ফ্রাংকের বড় লেখক হওয়ার শখ ছিল। ছোট এই কিশোরী মেয়েটি কখনো জানতে পারেনি যে এই পৃথিবীতে সত্যি সত্যি সে খুব বড় একজন লেখক হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তার ডায়েরিটি প্রায় ৭০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ডায়েরিটি প্রায় ৩০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। কত মানুষ অশ্রুসজল চোখে এই ডায়েরি পড়েছে তার কোনো হিসাব নেই।

অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামে গিয়ে আমার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি উপলব্ধি হয়েছে। একটি মিউজিয়াম বললেই আমাদের চোখের সামনে বিচিত্র সামগ্রী দিয়ে সমৃদ্ধ একটি জায়গার কথা মনে পড়ে। অ্যানি ফ্রাংকের মিউজিয়ামটি কিন্তু সে রকম নয়; সেই জায়গাটি ছাড়া এখানে আর বিশেষ কিছু নেই, তারপরও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত একটি মিউজিয়াম। এটি একনজর দেখার জন্য সারা পৃথিবীর মানুষ দিনের পর দিন অপেক্ষা করে। ১৯৭১ সালে আমরাও কিন্তু একটি যুদ্ধের ভেতর দিয়ে গেছি। আমাদের দেশের আনাচকানাচে এ রকম অসংখ্য দুঃখ-বেদনা, নৃশংসতা কিংবা বীরত্বের চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আমরা কেন সেগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করি না? কত অকাজে সময় নষ্ট করি, নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আমরা সেগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করি না কেন? বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া বধ্যভূমিগুলো খুঁজে বের করা কি অসাধারণ একটি কাজ হতে পারে না?

৩.

কয়েক দিন আগে ব্রিটেন একটি গণভোট করে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণভোটের সময় আমি যদি দেশে থাকতাম, তাহলে বিষয়টাকে সে রকম গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ করতাম কি না জানি না। নিশ্চয়ই আমার মনে হতো আমি আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিয়ে কী করব? কিন্তু ব্রিটেনের গণভোটের সময় আমি ইউরোপে বসে আছি বলে হঠাৎ করে পুরো ব্যাপারটা খুবই কৌতূহল নিয়ে লক্ষ করেছি। গণভোটের ফলাফল আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক মনে হয়েছে। আমরা সবাই জানি মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তু শরণার্থী নিয়ে ইউরোপে মোটামুটি একটা বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খুঁটিয়ে দেখলে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে পশ্চিমা জগতের হৃদয়হীন কর্মকাণ্ডের কারণে এই বিপর্যয় শুরু হয়েছে। কাগজ-কলমে যা-ই থাকুক, ব্রিটেনের এই গণভোট হয়েছে একটা মূল বিষয়ের ওপর, ইউরোপের শরণার্থী সমস্যার দায়ভার ব্রিটেনও বহন করবে কি করবে না! অন্যভাবে বলা যায়, গণভোট হয়েছে ব্রিটেনের মানুষ স্বার্থপর হবে, নাকি স্বার্থপর হবে না তার ওপর। ব্রিটেনের মানুষ সারা পৃথিবীর কাছে জানিয়ে দিয়েছে তারা স্বার্থপর হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে! দেশটির নাম ছিল গ্রেট ব্রিটেন, আমার মনে হয়, গ্রেট শব্দটি তুলে সেখানে অসম্মানজনক একটা শব্দ বসানোর সময় হয়েছে।

তবে আমার কথাগুলো একটু বেশি কঠিন হয়ে গেছে। আমাদের আশাহত হওয়ার সময় এখনো আসেনি। কারণ এই গণভোটে তরুণ প্রজন্ম কিন্তু সত্যিকারের মানুষের মতো অবদান রেখেছে। তারা নিজেদের স্বার্থপর হিসেবে পরিচয় দিতে চায়নি। তারা কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হিসেবে থেকে পৃথিবীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চেয়েছিল। আমার ধারণা, সারা পৃথিবীর সব তরুণের মতোই তারাও নতুন পৃথিবীর প্রজন্ম হিসেবে নিজেদের একদিন প্রতিষ্ঠিত করবে।

পৃথিবীটাই এখন একটা সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষা করে আছি কখন পৃথিবীর মানুষ সেই সংকটকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission | powered by TechnoNext Software Limited.