এস আলমের গাড়ি সরাতে সহায়তা, নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বিএনপির

আরটিভি নিউজ

রোববার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১১:৪৩ পিএম


এস আলমের গাড়ি সরাতে সহায়তা, নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা বিএনপির
সংগৃহীত ছবি

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাদের সহায়তায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দলের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী কমিটি ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নামে কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানো যাবে না।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রেস বিজ্ঞপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) একই অভিযোগে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়াকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল।

জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ঘোষণা দেন এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন জমি ও সম্পদ কেউ যেন না কেনেন। ওই ঘোষণার পর ওই দিন রাতে কালুরঘাট শিল্প এলাকার একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে সরিয়ে নেওয়া হয় বিলাসবহুল গাড়িগুলো। এসব গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ ও অডি, পোরশে ও রেঞ্জরোভার ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

ভাইরাল ভিডিও থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস থেকে বিলাসবহুল দামি গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় তদারকি করেন। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুরও এস আলমের গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের করার বিষয়টি তদারকি করেন।

বিজ্ঞাপন

বিলাসবহুল গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে বের হওয়ার পরই বিএনপি নেতা এনামসহ অন্যান্যরা ওই এলাকা থেকে সরে যান বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এমন পরিস্থিতিতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের সশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিয়ে চারিদিকে শোরগোল উঠেছে।

এস আলম গ্রুপের বিশ্বস্ত একাধিক ব্যক্তির বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট রাতে নগরের নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে গাড়িগুলো সরিয়ে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউসে রাখা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে বৃহস্পতিবার রাতে দামি গাড়িগুলো ওয়্যারহাউস থেকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও খবরে বলা হচ্ছে এস আলমের ওয়্যারহাউস থেকে বের করা হচ্ছে দামি গাড়ি। কিন্তু বাস্তবে আমি গিয়েছিলাম নগরীর কালুরঘাট শিল্প এলাকায় মীর গ্রুপের ওয়্যারহাউসে।

তিনি আরও বলেন, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এবং আমি মামাতো-ফুপাতো ভাই। সালাম ভাই আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন বিএনপির কিছু ছেলে তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। তাই আমি বিএনপি নেতা সুফিয়ান ভাইকে সঙ্গে নিয়ে কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউসে যাই। সেখানে গাড়িগুলো কাদের ছিল তা আমি জানি না। আত্মীয়তার কারণে সালাম ভাইকে সহযোগিতা করতে সেখানে গিয়েছিলাম।

এনামুল হক বলেন, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের মেয়ের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের মেজ ছেলের বিয়ে হয়েছে। সেই সূত্রে তারা আত্মীয়। নিরাপত্তার জন্য তাদের ওয়্যারহাউসে এস আলমের গাড়ি রাখতেই পারে। এতে কোনো দোষ দেখছি না।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission