শুক্রবার আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব
শুক্রবার থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন। তাদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিন ফজর নামাজের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ইজতেমা। মাওলানা আহম্মেদ বাটলার বয়ান শুরু করবেন। জুমার নামাজ পড়াবেন মাওলানা যোবায়ের। তিনি আছরের পর বয়ান করবেন।
তবে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর থেকে শুরু হয়েছে আঞ্চলিক বয়ান।
আয়োজকদের পক্ষে জহির ইবনে মুসলিম জানান, আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত প্রতিদিন শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিরা বয়ান করবেন। সকালের বয়ান শেষে ১০টায় তালিম করবেন মাওলানা জিয়াউল হক, জুমার নামাজের পর বয়ান করবেন জর্ডানের খতিব ওমর ও মাগরিবের পর মাওলানা আহম্মেদ লাট বয়ান করবেন।
তুরাগ তীরে বিদেশ থেকে আগতদের জন্য রয়েছে আলাদা থাকার ব্যবস্থা। বিদেশি ছাউনির পূর্ব পাশে তৈরি করা হয়েছে মূল বয়ান মঞ্চ। এ মঞ্চ থেকেই উর্দুতে বয়ান করা হবে এবং এখান থেকেই বয়ানের বাংলা অনুবাদ করা হবে। তবে অন্যান্য ভাষাভাষীদের জন্য বয়ানের অনুবাদ করা হবে তাদের জন্য নির্ধারিত ছাউনিতে। প্রত্যেক ছাউনিতে মূল বয়ান অনুবাদ করার জন্য একজন করে দোভাষীর ব্যবস্থা রাখা হয় ইজতেমায়।
বিদেশি খিত্তায় দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা জানান, তাবলিগ জামাত আয়োজিত বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ এ আয়োজনে সকাল ১১টা পর্যন্ত ৩৬ দেশের ৭৫৯ জন বিদেশি অতিথি উপস্থিত হয়েছেন। ৩৬টি দেশের মধ্যে রয়েছে- ভারত পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, জাপান, ওমান, কানাডা, মোজাম্বিক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরগিস্তান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, জর্ডান ও যুক্তরাজ্য।
ইজতেমায় অংশ নিতে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) থেকেই বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন।
ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের যানবাহনগুলো ১৫ নম্বর সেক্টর এলাকাধীন কদমতলী মার্কেট, ৫ নম্বর ব্রিজের ঢাল এবং ১৭ নম্বর সেক্টর উলুদাহ মাঠে পার্কিং করতে হবে। সিলেট ও খুলনা বিভাগ থেকে আসা যানবাহনগুলো পার্কিং করতে হবে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টর লেকপাড় মাঠে।
এ ছাড়া রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারিত হয়েছে ১০ নম্বর ব্রিজ, ১১ নম্বর ব্রিজ লেকের পশ্চিম পাশে, ১৬ নম্বর সেক্টরের ভেতরে ও বউবাজার মাঠ। বরিশাল বিভাগ থেকে আসা গাড়িগুলো রাখতে হবে ধউর ব্রিজ ক্রসিং-সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশনে। এবং ৩০০ ফিট রাস্তা সংলগ্ন স্বদেশ প্রোপার্টির খালি জায়গায় পার্কিং করা হবে ঢাকা মহানগরীর গাড়িগুলো।
ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যানবাহন নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথভাবে পার্কিং করতে বলেছে ডিএমপি। এ ছাড়া খিলক্ষেত থেকে আব্দুল্লাপুর হয়ে ধউড় ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে পার্কিং করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশনায়। আগামী ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব এবং ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
বিশেষ নির্দেশনা
আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউর ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।
একইভাবে নবীনগর, বাইপাইল ও আশুলিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহনগুলো কামারপাড়া ও আব্দুল্লাহপুর ক্রসিং পরিহার করে সাভার, গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে অথবা ধউড় ব্রিজ ক্রসিং হয়ে মিরপুর বেড়ীবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।
ঢাকা থেকে এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে আসা যানবাহনসমূহ কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে প্রগতি সরণি হয়ে অথবা বিশ্বরোড ক্রসিং (নিকুঞ্জ-১ কেচি গেট) দিয়ে ইউটার্ন করে চলাচল করবে।
আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে ৩০০ ফিট দিয়ে আসা যানবাহন সমূহ কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-২ (এয়ারপোর্টগামী) পরিহার করে প্রগতি সরণি এবং কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-৪ (কাকলী মহাখালীগামী) ব্যবহার করবেন। কোনোভাবেই বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার করা যাবে না।
আখেরি মোনাজাতের দিন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা ও এয়ারপোর্টগামী এক্সিট পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
উত্তরার বাসিন্দা, বিমানযাত্রী, বিমান অপারেশনাল যানবাহন ও বিমান ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সব ধরনের যানবাহনের চালকরা বিমানবন্দর সড়ক পরিহার করে বিকল্প হিসেবে মহাখালী বিজয় সরণি হয়ে মিরপুর-গাবতলী সড়ক ব্যবহার করবেন।
ঢাকা মহানগর থেকে যেসব মুসল্লি পায়ে হেঁটে বিশ্ব ইজতেমাস্থলে যাবেন, তাদের তুরাগ নদীর ওপরে নির্মিত বেইলি ব্রিজ অথবা কামাড়পাড়া ব্রিজ দিয়ে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যাতায়াত করবেন।
বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন পদ্মা ইউলুপ এবং কুড়াতলী লুপ-২ হতে ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের জন্য পরিবহন সেবা দেওয়া হবে।
নির্ধারিত পার্কিং স্থানে মুসল্লিবাহী যানবাহন পার্কিংয়ের সময় অবশ্যই গাড়ির চালক ও হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং চালক ও যাত্রীরা একে-অপরের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখবেন, যেন বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে পারস্পরিক যোগাযোগ করা যায়। গাড়ির সামনে ড্রাইভারের মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান থাকবে।
৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব।
পরবর্তী চারদিনের বিরতির পর ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২২