ঢাকাসোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তাজউদ্দীন কলেজের নাম পরিবর্তন নিয়ে সোহেল তাজের প্রতিক্রিয়া

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ , ০৩:৩৯ পিএম


loading/img
ফাইল ছবি

দেশের ৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যার মধ্যে রয়েছে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অবস্থিত সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নাম। এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

সোহেল তাজ লিখেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার কিছু বলার নাই। কারণ, আমার বাবা এবং মা এই দেশ এবং এই দেশের মানুষকে অনেক ভালোবাসতেন। আর তাই এই দেশের জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন কিছু পাওয়ার জন্য না- তাই ওনাদের কর্মের স্বীকৃতি এই দেশ কোনোদিন যদি নাও দেয়- ইটস ওকে। বাংলাদেশ ভাল থাকলেই হল।’ 

বিজ্ঞাপন

কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে নিজের অনুভূতি জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, ‘মুছে যাক আমার নাম, তবু বেঁচে থাকুক বাংলাদেশ’- তাজউদ্দীন আহমদ। শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ আমাদের কাপাসিয়ার গর্ব ও অহংকারের নাম! বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ সাহেবের পরিবার এবং ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহ্ সাহেবের পরিবার এটা আমাদের কাপাসিয়ার ঐতিহ্য। 

সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, আজ ৬৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে তালিকার ৩৬ নম্বর কলেজের নামটি সরকারি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ। এই নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম ঠিক করা হয়েছে, কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ।

তিনি লিখেছেন, বোঝার সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি কলেজটি অবস্থিত গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের গ্রামের বাড়ি দরদরিয়া থেকে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে হাইলজোর গ্রামে। কলেজটি যখন সরকারিকরণ করা হয় তারও আরও অনেক আগে থেকেই এই কলেজের নামকরণ করা হয় ‘শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজ’ এবং এই নামেই কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়, যার আগে নাম ছিল ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজ হাইলজোর।

বিজ্ঞাপন

সোহেল তাজ লিখেছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার ৯ মাসের মাথায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেছে বর্তমান সরকার। যার ফলে আমরা এখন নতুন নাম পেয়েছি ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’। আপনাদের সুবিধার্থে আরও একটি তথ্য জানিয়ে রাখি, কাপাসিয়া সদরে কিন্তু আরো একটি ডিগ্রি কলেজ আছে। তার নামও ‘কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ’ (সরকারি হয় নাই এখনও)। 

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও লিখেছেন, কথা হচ্ছে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শহীদ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের নাম বাদ দিয়ে নতুন নামের কারণে কী কী সুবিধা আমরা পাব! স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহানায়কের নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যই বা কী? কর্তৃপক্ষ কি এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারবে?

Capture

সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, আসলে নাম পরিবর্তনেই বা কী আসে যায়, যেখানে আমাদের নেতা তাজউদ্দীন আহমদ বলে গিয়েছেন, ‘মুছে যাক আমার নাম, তবু বেঁচে থাকুক বাংলাদেশ’। আর এইটা তো একটা কলেজ মাত্র। তবে দুঃখ লাগে! তাও লাগতো না, যদি না কলেজটি অন্য কোনো জায়গায় হতো৷ কলেজটি যে তাজউদ্দীন আহমদের নিজ ইউনিয়নে। 

তিনি লিখেছেন, সারাদেশে যখন শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ চত্বরে উনার ম্যুরালে মালা পরিয়েছিল ছাত্র-জনতা! 

বিগত ৫৪ বছরের নাম নিয়ে কাপাসিয়ায় কোনো অপরাজনীতির ইতিহাস নেই উল্লেখ করে তাজউদ্দীনপুত্র আরও লিখেছেন, কেবল চোখে পড়ছে!  এরা কারা, কী স্বার্থ তাদের? 

সবশেষে তিনি লিখেছেন, আমি এতো কিছু জানি না, এতো কিছু বুঝি না। তবে আমি এই কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ  জানাচ্ছি। ধন্যবাদ। 

আরটিভি/আইএম/এআর

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |