আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অন্যতম সদস্য তাওহীদ হৃদয়। এই ডান হাতি ব্যাটারকে পরিকল্পনায় রেখেই টপ অর্ডার সাজাবে টাইগার ম্যানেজমেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বাজে ভাবে দুই ম্যাচ হারের পরও বাংলাদেশ দলকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেখতে চান হৃদয়।
বিসিবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে হৃদয় বলেন, এবারের বিশ্বকাপে নিজের নামের পাশে কিছু দেখতে চাই না। আমি চাই দল যেন ভালো করে। আমার জায়গা থেকে অবশ্যই নিজের সেরাটা দিয়ে অবদান রাখার চেষ্টা করব। আমি চাই আমার দল কমপক্ষে সেমিফাইনাল খেলুক।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের হৃদয়ের উপর ভরসা রেখেছিল বাংলাদেশ দল। তবে তার যোগ্য প্রতিদান দিতে পারেননি এই তরুণ ক্রিকেটার। ভারত বিশ্বকাপের ব্যর্থতা নিয়ে হৃদয় বলেন, ২০২৩ বিশ্বকাপে যেটা হয়েছে, হয়তো আমাকে নিয়ে দলের পরিকল্পনা ছিল এমন। কিন্তু ২০২৩ বিশ্বকাপের আগে তো আমি অন্য জায়গায় ব্যাটিং করেছি। সব সময় উপরেই খেলেছি।
‘কিন্তু বিশ্বকাপে যখন হঠাৎ করে নিচে ব্যাটিং করেছি ছয়ে-সাতে, তখন আমার জন্য মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়েছিল। এরপরও চেষ্টা করেছি। দল আমার কাছে যা চেয়েছে, তা দিয়ে দলে অবদান রাখার জন্য। হ্যাঁ, কিছু ম্যাচ পারিনি। আপনি যদি দেখেন, ছয়-সাত এমন এক পজিশন, যেখানে ব্যাটাররা প্রতিদিনই ভালো খেলবে না। এমন কোনো ব্যাটার নেই যে এখানে নিয়মিত ভালো করবে।’
‘আমি দুই ম্যাচ উপরে ব্যাট করারি সুযোগ পায়, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। ভারতের সঙ্গে রান করতে পারেনি আর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমি ৭৪ করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো একটা অভিজ্ঞতা ছিল। অনেকে বলে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আমি এখনও তা দেখিনি। আমি চাইব আল্লাহ পাক আমাকে যেন সেটা না দেখায়। চাইব যেন দলের জন্য সব সময় অবদান রেখে যেতে পারি।’
এই হৃদয়-শরিফুলদের হাত ধরেই বাংলাদেশ প্রথম আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, চোখ খুলেও এখনো অনুভব করি যে কীভাবে কী করেছিলাম সে সময়টায় (অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ)। এখন আমাদের সময় এসেছে জাতীয় দলের হয়ে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো জায়গায় গিয়ে ভালো করা, কাপ নেওয়া।
‘ভালো করা না, কাপ নিতে চাই। শুধু আমি না, আমরা সবাই চাই। আমরা যদি আমাদের দিক থেকে ভালো করতে পারি; তাহলে বেশি দেরি নেই; আমরা কাপ নিয়ে নিব ইনশাল্লাহ। আইসিসি ইভেন্ট জেতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যখন জিতব, তখন আমাদের সেভাবেই মূল্যায়ন করবে সবাই।’
‘এখন যেমন অস্ট্রেলিয়া বা বড় বড় দলের খেলোয়াড়দের যেভাবে মূল্যায়ন করা হয়…আমরা যদি দু-একটি ট্রফি জিততে পারি, তাহলে আমাদের মানসিক সন্তুষ্টি, আত্মবিশ্বাস…আমাদের যে নতুন প্রজন্ম আসবে, তাদেরও ওইভাবে সবাই মূল্যায়ন করবে। এই জিনিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। পরিশ্রমের বিকল্প নাই। সবাই যদি আমাদের জায়গা থেকে ছোট ছোট জিনিসগুলা উন্নতি করি ইনশাল্লাহ আমরা এটা সহজেই পাব।’
ক্রিকেটে নিজের আইডল নিয়ে তিনি আরও বলেন, মুশফিক ভাই আমার ছোট থেকেই আইডল। ক্রিকেট তো তখন নেশা ছিল। এলাকায় খেলতাম। তখন থেকেই শুনতাম আমাদের বগুড়ার প্লেয়ার মুশফিক ভাই। উনিই আমার আইডল, এখনও উনিই, যতদিন আছি উনিই থাকবে।
‘উনি অনেক পরিশ্রমী, অনেক শৃঙ্খলাবদ্ধ। আগে হয়ত দূরে থেকে দেখেছি এখন কাছ থেকে দেখছি। ড্রেসিংরুম শেয়ার করছি। আমারও ইচ্ছা আছে দেশের জন্য লম্বা সময় সার্ভিস দেওয়ার উনার মত।’