আলোচনার নতুন খোরাক ৮ ফেব্রুয়ারি
আগামীকাল বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় প্রদান করবেন আদালত। এই মামলার প্রধান আসামি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কি রায় হবে তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল ও শঙ্কা তৈরি করছে।
রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, গুলিস্তান, মালিবাগ, মগবাজার, শাহবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শ্যামলী ও মহাখালী ঘুরে দেখা যায় অলিগলিতে চায়ের দোকানসহ গণপরিবহন, অফিস-আদালতসহ সর্বত্র ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে কথা হচ্ছে।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের একটাই প্রশ্ন, খালেদার কারাগারে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আবার কি ফিরে আসবে নাশকতা-নৈরাজ্যের ভয়াল রাজনীতি! এমন উৎকণ্ঠা ভর করছে গোটা দেশে। এমনকি রায়কে ঘিরে দেশব্যাপী ব্যাপক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। চলছে গ্রেপ্তার, তল্লাশিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতা। সেই সাথে ক্ষমতাসীন দল-আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল- বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, হুঁশিয়ারি ও রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণায় উদ্বিগ্ন দেশবাসী।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা বললে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে কোন ইস্যু পেলে দেশকে অস্থির করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে থাকে। এতে যেমন জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পায়, তেমনি সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তাতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়। খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে যাতে দেশে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সরকারের কাছে তারা অনুরোধ জানান।
তবে রায় নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ২০ লাখ শিক্ষার্থী। পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সাধারণ আট বোর্ডে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, বৌদ্ধ ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং খ্রিস্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মাদরাসা বোর্ডে এদিন বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, ঢাকায় প্রবেশদ্বার-যাত্রাবাড়ী, আবদুল্লাহপুর, সদরঘাট, গাবতলীসহ সব পথে ব্যাপক তল্লাশি অভিযানসহ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর প্রবেশপথে পুলিশের এ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
এছাড়া মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ৮ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ছড়ি বা লাঠি, ছুরি, চাকু বা ধারালো অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ বহন নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজিবি মোতায়েন
--------------------------------------------------------
এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার চূড়ান্ত রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান দুটি দলের নেতাদের পাল্টাপাল্টি উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘোলাটে পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আজ (বুধবার) সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার রায় হবে এটাই স্বাভাবিক। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে কার্যক্রম চলবে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রায়কে ঘিরে জ্বালাও পোড়াও হলে জনগণের জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনী তা প্রতিহত করবে।
বুধবার সকালে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি রাজধানীবাসী ও দেশবাসীকে জানাতে চাই; জনগণের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘিরে বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এরপর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন। অপরদিকে ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন:
এমসি/পি
মন্তব্য করুন