৭ই মার্চের জনসভা প্রতিহত করতে জেনারেল ইয়াহিয়ার বিশেষ বাহিনী গঠন
একাত্তরের এই দিনে ৭ই মার্চের জনসভা প্রতিহত করতে বিশেষ বাহিনী গঠন করেন জেনারেল ইয়াহিয়া। গ্রেপ্তার করা হয় আওয়ামী লীগের বেশ ক’জন নেতাকে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এদিনও কাজে যোগ দেয়নি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শেখ মুজিবের ঘনিষ্ঠ ও সহযোগী কয়েক’শ লোকের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয় রাওয়ালপিন্ডিতে। সবার দৃষ্টি ৭ মার্চের জনসভার দিকে। কী নির্দেশনা দেন বঙ্গবন্ধুর।
এদিন বাঙালির তুমুল আন্দোলনে উত্তাল ছিল গোটা দেশ। স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল-সমাবেশ-হরতালও অব্যাহত ছিল এদিন। দিনভর রেসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চ আওয়ামী লীগের জনসভার মাইকিং চলে।
এমনই উত্তাল পরিস্থিতিতেই পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল এসএম আহসানকে অপসারণ করে ইয়াহিয়া নতুন গভর্নর বানায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান এ দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি ভাষণে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষকে সংযত হবার নিদের্শ দেন। বলেন অন্যথায় আইন অমান্যকারীদের শাস্তি দেয়া হবে।
তার এ ভাষণ চলাকালে ঢাকায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক চলছিল। বৈঠকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন এক সেনা কর্মকর্তা। তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছে জেনারেল ইয়াহিয়ার একটি বার্তা পৌঁছে দেন।
এ বার্তায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সংযত দেখানো আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঢাকায় এসে তিনি ৬ দফার চেয়েও বড় কিছু দেবেন।
দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এ বার্তায় নিয়ে বৈঠক করেন বঙ্গবন্ধু। আন্দোলনের আইনগত দিক নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। সিদ্ধান্ত হয় আন্দোলন অব্যাহত রাখার। ৭ই মার্চের জনসভার প্রস্তুতি চলতে থাকে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মিছিল বের করেন সাংবাদিকরা। কারফিউ ভঙ্গ করে এদিনও বিক্ষোভ করে কয়েক হাজার মানুষ
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম, টঙ্গী, রাজশাহী, রংপুর ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রাতে পাঞ্জাব প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদ সরফরাজসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন:
- কারাগার থেকে পালিয়ে আসে ৪শ’ স্বাধীনতাকামী বাঙালি
- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্টের শ্রদ্ধা
জেএইচ
মন্তব্য করুন