পানি বাড়ছে পদ্মার, হুমকিতে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ
বেড়েই চলছে পদ্মার পানি। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আগামী ৭২ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, উজানের পানি নেমে আসায় পদ্মা-মেঘনা নদীর পানি বাড়বে। এতে মধ্যাঞ্চলসহ ভাটির জেলাগুলোয় বন্যা দেখা দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ালন্দ দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে করে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পদ্মানদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালী ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী ও বাঁধের ভিতরে বসবাসরত নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে অব্যাহতভাবে পানি বাড়তে থাকায় হুমকিতে পড়েছে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ। রাজশাহীতে বর্তমানে বিপদসীমার মাত্র দেড় মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা।
আশঙ্কা করা হচ্ছে এবার বন্যা পরিস্থিতির যেভাবে অবনতি হচ্ছে তাতে চলতি ধারায় পানি বাড়তে থাকলে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তাই সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পয়েন্টেই পানি বাড়ছে। আর পশ্চিমের মহানন্দা নদী থেকে ঝড়ের বেগে পানি ঢুকছে পূর্বপাশে। সেই পানি বর্তমানে পাঁচ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক জানান, রাজশাহীতে পদ্মা নদীর বিপদসীমা হচ্ছে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। তবে পানি এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। বর্তমানে এর দেড় মিটার নিচে অবস্থান করছে পানি।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য তাদের পর্যাপ্ত বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক মজুদ আছে।
এদিকে চলমান বন্যায় দেশের ২১ জেলায় ৩২ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ও ফসলি জমি এক লাখ ৭২ হাজার ২১৭ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবের চলতি দায়িত্বে থাকা মো. গোলাম মোস্তফা।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকের বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ ৫২ হাজার পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে ৩৭ জন। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এক হাজার ৫৯৯টি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে চার লাখ ১১ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
এসএস
মন্তব্য করুন