জাফর ইকবাল ‘ইসলামের শত্রু’, তাই হামলা চালায় ফয়জুর
জাফর ইকবাল ইসলামের শত্রু, তাই তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হামলার কারণ সম্পর্কে র্যাবকে এমনটাই জানিয়েছেন হামলাকারীর ফয়জুর রহমান।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শনিবার মধ্যরাতে রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, হামলাকারী যুবককে চিকিৎসার জন্য সিলেট জালালাবাদ সেনানিবাসস্থ সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরেছে। তবে সে তার পরিচয় ঠিকভাবে বলছে না। তার নাম সে একবার বলে শফিকুর রহমান, আরেকবার বলে ফয়জুর রহমান। জ্ঞান ফেরার পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে।
তিনি আরও জানান, হামলাকারী কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কি না এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানা যায়নি। তদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
শনিবার রাতেই এ যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম ফয়জুর রহমান। সে একটি মাদরাসায় পড়ালেখা করেছে। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়ারকাপনে। তার বাবা হাফিজ আতিকুর রহমান মাদরাসার শিক্ষক। তারা বর্তমানে সিলেটের কুমারগাঁও এলাকার শেখ পাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
এদিকে হামলাকারী ফয়জুর রহমানের শেখপাড়ার বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি চালিয়েছে। সেসময় বাসাটি বাইরে থেকে তালা লাগানো থাকায় তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে বাসার ভেতরে ফয়জুরের মামা ফজলুর রহমান অবস্থান করছিলেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। পাশাপাশি বাসাটি থেকে একটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় হামলাকারীর চাচা আব্দুল কাহার লুলইকে (৫৫) আটক করেছে র্যাব-৯ এর সদস্যরা।
এর আগে শনিবার বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান চলাকালে অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল হামলার শিকার হন। তার পেছনে থাকা ফয়জুর রহমান ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করেন।
রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে সেখানে একটি অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শনিবার রাতে বিমানবাহিনীর একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আনা হয়। পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।
জানা যায়, জাফর ইকবালের মাথায় চারটি আঘাত করা হয়েছে। এছাড়া তার বাঁ হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে। তার শরীরে ২৫ থেকে ২৬টি সেলাই পড়েছে।
এ ঘটনায় আজ রোববার মামলা হতে পারে বলে আরটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:
এমসি/এসএস
মন্তব্য করুন