কুরবানির জন্য চাহিদার দ্বিগুণ পশু প্রস্তুত পঞ্চগড়ে

রাজিউর রহমান রাজু, পঞ্চগড়

বুধবার, ১৫ আগস্ট ২০১৮ , ১১:১৯ এএম


কুরবানির জন্য চাহিদার দ্বিগুণ পশু প্রস্তুত পঞ্চগড়ে

আসন্ন ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড় জেলায় এবার চাহিদার দ্বিগুণ পশু প্রস্তুত করছেন খামারিরা। তবে এ জেলায় বড় খামারির চেয়ে প্রান্তিক খামারির সংখ্যাই বেশি।

বিজ্ঞাপন

জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বড় খামার থেকে শুরু করে চাষি পর্যায়ের প্রান্তিক খামারিরা দেশীয় পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সবুজ ঘাস,  খড়, কুড়া, খৈল ও ভুষি দিয়ে পশু মোটাতাজা করছেন তারা। ফলে যেকোনো ধরনের রোগ বালাইয়ের ঝুঁকিও নেই এসব পশুর মধ্যে। শুধুমাত্র চিকিৎসকদের পরামর্শে প্রয়োজন মতো কৃমিনাশকসহ নির্দিষ্ট রোগের ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তবে মোটাতাজা করার জন্য ক্ষতিকর ট্যাবলেট ও ইঞ্জেকশন ব্যবহার থেকে বিরত রয়েছেন খামারিরা। এতে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে নিরাপদ পশু কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার মোট ৪৬ হাজার তিনশ’ ৪৬টি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেনে খামারিরা। এর মধ্যে ২৬ হাজার আটশ ৪৬টি গরু এবং ১৩ হাজার দুইশ’ ১০টি ছাগল রয়েছে।

জেলায় মোট খামারির সংখ্যা ছয় হাজার দুইশ’ ৯০ জন। এর মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় মোট বড় খামারির সংখ্যা মাত্র চারশ’ জন। অন্যান্য পাঁচ হাজার আটশ’ ৯০ জনের সবাই এককপর্যায়ে একটি বা দুইটি পশু পালন করা প্রান্তিক খামারি।

বিজ্ঞাপন

পঞ্চগড় জেলায় কুরবানির জন্য ১৫ হাজার গরু এবং পাঁচ হাজার ছাগল প্রয়োজন। তবে যে পরিমাণ পশু পঞ্চগড় জেলায় পালন হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। অতিরিক্ত এসব পশু দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন খামারিরা। 

জেলার সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের শেখের হাট এলাকার খামারি অহাম্মেদ শফি সওদাগর আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি ছয় মাস আগে ২৩ লাখ টাকা দিয়ে ৪০টি আড়িয়া গরু কিনে এই খামার তৈরি করেছি।
-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : কুরবানি যোগ্য ও অযোগ্য পশু চিনবেন যেভাবে
-------------------------------------------------------

সম্পূর্ণ দেশীয় ব্যবস্থায় গরুগুলো মোটাতাজা করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন তো খরচ হচ্ছেই। তবে ঈদ উপলক্ষে এই গরুগুলো বিক্রি করে লাভের মুখ দেখব বলে আশা করছি।

সদর উপজেলার সুরিভিটা এলাকার খামারি আব্দুল্লাহ আল মুহিত আরটিভি অনলাইনকে বলেন,  আমার খামারে কুরবানির জন্য সাতটি গরু প্রস্তুত করেছি। আমরা কোনও প্রকার মেডিসিন ব্যবহার না করায় এখন থেকেই ক্রেতাদের সাড়া পাচ্ছি। আমাদের এখানে ক্রেতাদের জন্য সুবিধা হলো গরু কিনে এখানেই রেখে যাওয়া যায়। ঈদের সময় সরাসরি নিয়ে কুরবানি করতে পারেন।

হাড়িভাসা এলাকার প্রান্তিক খামারি আবুল হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন,  আমাদের খামার করার তেমন সামর্থ নাই। বাড়িতেই দুটি আড়িয়া গরু পালন করছি। ঈদ উপলক্ষে বিক্রি করব।

তবে বর্তমানে বিভিন্ন এলাকা থেকে পার্টিরা এসে আমার বাড়িতেই গরুর দাম করছেন। দুটি গরু ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কেনা ছিল। বর্তমানে ৭২ থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বলছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. দেবাশীষ দাশ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, পঞ্চগড় জেলায় যে সমস্ত পশু কুরবানির জন্য খামারিরা প্রস্তুত করেছেন তা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে। এখানে কোনও রকম কৃত্রিম পদ্ধতি বা হরমোন জাতীয় কোনও ওষুধ ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ হয় না। আমরা খামারগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধের দোকানগুলোতেও মনিটরিং করছি।

আরও পড়ুন :

জেবি

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission