ঈদের ছুটিতে মৌলভীবাজারে বাড়ছে পর্যটকদের ভিড়
ঈদের আনন্দে প্রকৃতির বুকে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। তাইতো যানজট আর কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভিড় করেছেন প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা। প্রকৃতির লীলাভূমি খ্যাত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ প্রতিটি পর্যটন স্পটগুলো হাজারও পর্যটকদের ভিড়ে উৎসবমুখর। আনন্দের এই দিনে দূর-দূরান্ত থেকে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে গেছেন লাউয়াছড়া, মাধবকুণ্ড, হামহামসহ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে।
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এদিকে ছুটিতে নির্মল সবুজের স্বাদ নিতে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই, মাধবপুর লেইক, বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক আকর্ষণ করেছে পর্যটকদের। শুধু তাই নয়, জেলার বড়লেখা উপজেলার পাথাড়িয়া পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা দেশের দীর্ঘতম জলপ্রপাত মাধবকুণ্ডে বছরের অন্যান্য ছুটির সময়ের মতোই এবারের ঈদের ছুটিতে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। অনেকে ছুটে এসেছেন যানজট আর কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে। দিনভর গভীর সবুজ অরণ্যের বুকে কখনও বৃষ্টি, কখনও রোদ খেলা করছে। চিরহরিৎ সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে কিংবা বৃক্ষের ডালের দিকে ছিল হাজারও ভ্রমণপিপাসুর দৃষ্টি। যদি একটি বারের জন্য হলেও শোনা যায় বিলুপ্তপ্রাণী উল্লুকের ডাক কিংবা গাছের ডালে দেখা যায়, লজ্জাবতী অথবা চশমাপরা হনুমান। তবে নিরব এ স্থানে এতো লোকের সমাগম দেখে মাঝেমধ্যে দুএকটা চশমাপড়া হনুমান ছাড়া তেমন কোনও প্রাণী দেখতে পাননি পর্যটকরা। সবাই দলবেঁধে দিনভর ঘুরে বেড়িয়েছেন। দেখেছেন বিরল প্রজাতির আফ্রিকান টিকওক, সারি সারি ডুমুর, লটকন, সেগুন, আমলকি, জলপাইসহ নানা প্রজাতির গাছ।
-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন :গাইবান্ধায় গোসলে নেমে যমুনায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী নিখোঁজ
-------------------------------------------------------
তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সড়কগুলোতে খানাখন্দ থাকায় যাতায়াতে অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে পর্যটকদের।
ঢাকা থেকে বন্ধুদের সাথে চা বাগানে বেড়াতে এসেছেন তিথি ইসলাম। তিনি আরটিভি অনলাইনকে জানান, ঈদের ছুটি কাটাতে তারা কয়েকজন বন্ধু প্লান করে বেড়াতে এসেছেন সিলেটে। কিন্তু রাস্তাঘাট বেশি ভাঙাচোরা। তাই অনেক জায়গায় বেড়াতে যাওয়া হচ্ছে না। গাড়ির ড্রাইভারও যেতে চান না, মাঝপথে বিকল হয় যাওয়ার ভয়ে। তিথির মতো অনেক পর্যটক একই কথা বলেছেন। স্থানীয় কয়েকজন রিসোর্ট ও দোকানি জানান, শুধুমাত্র রাস্তাঘাটে গর্ত ও খানাখন্দের কারণে গত বছরের চেয়ে এ বছর ভ্রমণপিপাসুর পরিমাণ খুবই কম। যারা আসেন তারা আবার বন্ধুদের আসতে নিষেধ করেন।
এদিকে বিগত বছরের চেয়ে এবছর ঈদের দিনে পর্যটকের সমাগম অনেক বেশি হয়েছে এবং ঈদের ছুটি থাকা পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। তাছাড়া লাউয়াছড়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের দিকনির্দেশনা, বিনোদন ও নিরাপত্তা দিতে র্যাব ও পর্যটক পুলিশ সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন :ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত
-------------------------------------------------------
এ বিষয়ে র্যাব-৯ এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমানচন্দ্র কর্মকার আরটিভি অনলাইনকে বলেন- ঈদের সময় মৌলভীবাজারে দেশ-বিদেশ থেকে ভ্রমণ করতে পর্যটকরা আসেন। ভ্রমণকে নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে র্যাব-৯ নিরাপত্তা ও টহল বাড়িয়েছে।
মৌলভীবাজারের গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের জিএম আরমান খান আরটিভি অনলাইনকে বলেন- মৌলভীবাজারে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষদের গ্র্যান্ড সুলতানের প্রতি দারুণ আগ্রহ। আমরা সেভাবে বুকিং নিচ্ছি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাশাপাশি মানুষ সিলেটমুখী হচ্ছে। এজন্যে আমরা আশাবাদী। গ্রাহকদের পর্যাপ্ত সুবিধা দিতে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি।
মৌলভীবাজারের আরেকটি রিসোর্টের মালিক এস কে দাস সুমন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশ সাড়া পাচ্ছি। তাই আগের চেয়ে আমরা আরও সুবিধা বাড়িয়েছি। আশা করি মৌলভীবাজারে পর্যটকরা বেড়াতে এসে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারবেন।
আরও পড়ুন :
এমসি/পি
মন্তব্য করুন