শেখ রাসেল সেতু সংরক্ষণ বাঁধে ভাঙন
গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ায় আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ভাঙনের সঙ্গে দীর্ঘকাল ধরে যুদ্ধ করে আসছে শহর ঘেঁষা হরিপুরবাসী। তবে হরিপুর শেখ রাসেল ব্রিজ নির্মাণ ও ব্রিজ রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের পর এবার হরিপুরসহ নদীতীরবর্তী মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। তারা ভেবেছিল আর ভাঙন হবে না। কিন্তু প্রবল স্রোতের কারণে এবার ভেঙে গেছে নদীর ওপর নির্মিত কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতুর সংরক্ষণ বাঁধ।
নির্মাণের এক বছরের মাথায় এই বাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতু। হঠাৎ এমন ভাঙন দেখা দেয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার হাজারো মানুষ। ব্রিজ নির্মাণের পর থেকেই হরিপুরবাসী ব্রিজ সংরক্ষণ বাঁধ আরও এক কিলোমিটার বাড়িয়ে দেয়ার দাবি তোলে। তারা বলছেন যদি তাই করা হতো এবার হয়ত এই ভাঙন এড়ানো যেত। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে ব্যবস্থা হবে।
এলাকাবাসী জানান, গেল শনিবার সন্ধ্যায় সেতুর হরিপুর অংশের পশ্চিম পাশে প্রায় একশ’ মিটার নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ভেঙে শেখ রাসেল সেতুর প্রটেকশন বাঁধে ঢুকে পড়ে। এতে এক রাতেই সেতুর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ৩০মিটার নদীতে তলিয়ে যায়। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আগে থেকেই নদীর এই স্থানটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছিল। বিষয়টি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার কর্মকর্তাদের অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনও প্রকার উদ্যোগ না নেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় কিছুটা হলেও হুমকির মুখে পড়েছে গড়াই নদীর ওপর নির্মিত কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতু। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, হঠাৎ করে নদিতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, এটি সামান্য বিষয়, আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, ভাঙনরোধে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালে গড়াই নদীর ওপর নির্মিত কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতুর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। পাঁচ কোটি টাকায় সেতুর দুই পাড়ে সংরক্ষণ বাধ নির্মাণের কার্যাদেশ পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার গ্রুপ। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। নির্মাণের মাত্র এক বছরের মাথায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
জেবি
মন্তব্য করুন