ফোরজি কি বাস্তবে থ্রিজি?
চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোরজির অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে আজ সোমবার। সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেটরদের হাতে এর লাইসেন্স তুলে দেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। আনুষ্ঠানিকভাবে দেশ ফোরজি যুগে প্রবেশ করবে।
ফোরজি চালু হওয়ার পরপরই গ্রাহকদের এই সেবা দেবে বলে জানিয়েছে মোবাইলফোন অপারেটরগুলো। তারা বলছে, ফোরজি চালুর পর কিছু সময়ের মধ্যে গ্রাহক এই সেবা নিতে পারবেন।
তবে প্রশ্ন হলো বাস্তবে কি গ্রাহকরা এই সেবা পাবে নাকি ফোরজির দামে থ্রিজি পাবে? সেবাটি নিয়ে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
ফোরজির সুবিধা কী?
এর আগের প্রজন্মের প্রযুক্তি ছিল টুজি ও থ্রিজি। টুজিতে কেবল ফোন কল করা এবং টেক্সট মেসেজ পাঠানো যেত। থ্রিজি প্রযুক্তিতে মোবাইল ফোন থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ভিডিও কল করা এবং মিউজিক ও ভিডিও ডাউনলোড করার সুযোগ তৈরি হয়। থ্রিজিতে যা যা করা সম্ভব, তার সবকিছু ফোরজিতেও করা যাবে, তবে দ্রুতগতিতে এবং ভালোভাবে।
কিন্তু বাংলাদেশে থ্রিজি সেবার মান নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: অর্থমন্ত্রীর ‘রাবিশ’ এর রহস্য উদ্ধার
--------------------------------------------------------
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ফোরজি তরঙ্গের নিলামের আয়োজন করে। তাতে বর্তমানে সক্রিয় অপারেটর রাষ্ট্র মালিকানাধীন টেলিটকসহ ৪টির মধ্যে অংশ নিয়েছে দুটি অপারেটর। রবি এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূত হওয়ায় তার তরঙ্গ সব অপারেটরের চেয়ে বেশি ৩৬.৪ মেগাহার্টজ থাকায় নিলামে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে।
মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রশ্ন এতদিন ধরে রবি ৩৬.৪ মেগাহার্টজ দিয়ে যে থ্রিজি সেবা গ্রাহকদের দিয়েছে সেটার মান কি থ্রিজি পর্যায়ে ছিল? এই পরিমাণ তরঙ্গে ইন্টারনেটের গতি ছিল সর্বোচ্চ ৫ এমবিপিএস। ফোরজির জন্য গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এমবিপিএস। যেখানে এতদিন এই তরঙ্গ দিয়ে গড়ে ৬ এমবিপিএস গতিই আনা গেল না সেখানে একই পরিমাণ তরঙ্গ দিয়ে বর্তমান বিটিএস ব্যবহার করে কীভাবে ইন্টারনেটের মান বাড়াবে ফোরজি?
তিনি বলেন, তরঙ্গ বিক্রি করে সরকার হয়তো রাজস্ব আয় করেছে। যা জনগণের কাছ থেকেই পরোক্ষভাবে আদায় করা হয়েছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও অপারেটররা গ্রাহকদের মিথ্যা তথ্য ও আশ্বাস দিচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনক।
বিশ্লেষক আবু সাঈদ খান জানান, স্পিড বাড়বে সন্দেহ নেই। তবে অবকাঠামোর দিকটির দুর্বলতা তো আছেই। দেশের অভ্যন্তরে ডিজিটাল বিভক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। বড় বড় শহরের মানুষেরা এ সুবিধা পেলেও দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষগুলো এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।
তার মতে, গ্রাহক স্পিড পাবে না, পাবে ভলিউম। তার ওপর গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হচ্ছে তার সিমটি ফোরজিতে আপগ্রেড করার জন্য। কোনো ধরনের চার্জ নেয়া এ পর্যায়ে অনৈতিক। এই অর্থ নেয়ার অধিকার নেই। টুজি থেকে যখন থ্রিজিতে আসে তখন তো কোনো চার্জ নেয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:
এসআর
মন্তব্য করুন