মাদক চোরাচালানে অভিনব পদ্ধতি, অসহায় প্রশাসন
কখনও কুরিয়ার সার্ভিস কখনও কাভার্ড ভ্যান আবার কখনওবা সবজিবাহী ট্রাক, মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়ি। কক্সবাজার থেকে ইয়াবা আনতে এমন কোন মাধ্যম নেই যা মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করেন না। অভিনব এমন সব পন্থা ব্যবহারের কারণে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। কোটি কোটি পিস ইয়াবা উদ্ধারের পরও তাই মাদকে ছেয়ে যাচ্ছে দেশ।
সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিলে কুরিয়ার সার্ভিসে আসা মোটরসাইকেলের ভেতরের গোপন চেম্বারে ইয়াবা আসে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামে র্যাব। মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাংক কেটে ভেতরে বিশেষ চেম্বারে পাওয়া যায় ১০ হাজার পিসের মতো ইয়াবা। এভাবে নানা কায়দায় ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছানোর পর সিটি সার্ভিসের মাধ্যমে তা রাজধানীতে বিতরণ করে চক্রের সদস্যরা। রাজধানীর মহাখালীতে চক্রের এমন এক সদস্য ধরা পড়ে র্যাবের জালে। ‘সিটিং সার্ভিস’বাসের সিটের পেছনে বিশেষভাবে লুকিয়ে তারা ২০ হাজার পিস ইয়াবা আনছিল। অন্যদিকে ফেনসিডিল পরিবহনে তুলনামূলক বেশি জায়গা লাগে। তাই কখনও সবজির ট্রাক আবার কখনও কাভার্ডভ্যানে করে ইয়াবা চলে আসে রাজধানীতে। ফেনসিডিল পাচারের এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন কারওয়ান বাজারের একজন আলু ব্যবসায়ী।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: ভালোবাসার গল্প লিখে পুরস্কার!
--------------------------------------------------------
নিয়মিত অভিযানের ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা নিত্য নতুন পদ্ধতিতে মাদক আনার চেষ্টা করেন।
রাজধানীর পরীবাগের বিলাসবহুল একটি বাড়ির নাম দিগন্ত টাওয়ার। ২৭শ’ স্কয়ার ফিটের একেকটি বাসা ভাড়া নিতে মাসে গুনতে হয় প্রায় লাখ টাকা। ভবনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাও চোখে পড়ার মতো। এমনই এক সুরক্ষিত ভবনে গেল বছর জুলাই মাসে ঘটে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনা। টাওয়ারের ৩/৩-এ নম্বর ফ্ল্যাটে ধর্ষণের পর গৃহকর্মীকে ৭তলা থেকে ফেলে দেয় নেশাগ্রস্ত ফ্ল্যাট মালিক সালেহ আহম্মেদ। ৭তলা থেকে ফেলে দেয়া এ গৃহকর্মীকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাওয়া যায় রাজধানীর মধুবাগ বস্তি এলাকায়। ইয়াবার নেশা যে প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যক্তির জীবন ধ্বংস করে দিতে পারে তার উদাহরণ এ ব্যবসায়ী।
র্যাব-২এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আলী বলেন, ইয়াবার সবচেয়ে বড় রুট চট্টগ্রাম। কক্সবাজার থেকে যেকোনও মাধ্যমে তারা চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসে। চট্টগ্রাম থেকে প্রসেস করে তারা রাজধানীতে চালান নিয়ে আসে।
ইয়াবার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ডা. খান মো. আবুল কালাম আজাদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ইয়াবা সেবন করলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা থাকে। নিয়মিত ইয়াবা সেবনে মানুষের আয়ু কমে এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। এছাড়া অন্তঃনালীর কার্যকারিতা নষ্ট হয় ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। শরীরের তাপমাত্রা ও কিডনি নষ্ট হয়। দিনে দিনে সেবনকারী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:
এমসি/পি
মন্তব্য করুন