• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ন্যায় প্রতিষ্ঠার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ইমাম হোসাইনের (রা.) আত্মত্যাগ

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২০:০৪

আজ পবিত্র মহররম মাসের প্রথম দিন। ইসলামী শরীয়তে জিলকাদ, জিলহাজ্জ, মহররম ও রজব এ ৪টি মাসকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। এই ৪ মাসের মধ্যে মহররম মাসকে বিশেষভাবে মর্যাদা প্রদান করে একে ‘আল্লাহর মাস’ বলে আখ্যায়িত করেছেন নবী করিম সাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম।

হাদীস শরিফে বলা হয়েছে, মহররম মাসের নফল রোযার সাওয়াব অন্য সকল নফল রোযার সাওয়াবের চেয়ে বেশি। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘ রমজানের পরে সবচেয়ে বেশি ফজিলতের সিয়াম হলো আল্লাহর মাস মহররমের সিয়াম।’ মুসলিম, আস-সহীহ ২/৮৬১।

মহররম মাসের ১০ তারিখে তথা আশুরার দিনে সিয়াম পালনের জন্য বিশেষভাবে উৎসাহ ও নির্দেশনা দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ সা.। জাহিলী যুগে মক্কার মানুষেরা আশূরার দিন সিয়াম পালন করত এবং কাবা ঘরের গিলাফ পরিবর্তন করত। হিজরতের পূর্বে মক্কায় অবস্থানকালে রাসূলুল্লাহ সা. নিজেও এ দিন সিয়াম পালন করতেন।

এ বিষয়ে ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা. মদীনায় এসে দেখেন যে, ইহুদিরা আশূরার দিন সিয়াম পালন করে। তিনি তাদেরকে বলেন, এ দিনটির বিষয় কি যে তোমরা এ দিনে সিয়াম পালন কর? তারা বলেন, এটি একটি মহান দিন। এ দিনে আল্লাহ মূসা (আ.) ও তার জাতিকে পরিত্রাণ দান করেন এবং ফিরআউন ও তার জাতিকে নিমজ্জিত করেন। এজন্য মূসা কৃতজ্ঞতা-স্বরূপ এ দিন সিয়াম পালন করেন। তাই আমরা এ দিন সিয়াম পালন করি। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, মূসার (আ.) বিষয়ে আমাদের অধিকার বেশি। এরপর তিনি এ দিবসে সিয়াম পালন করেন এবং সিয়াম পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। বুখারী, আস-সহীহ, ২/৭০৪, ৪/১৭২২; মুসলিম, আস-সহীহ ২/৭৯৬।

রমজানের সিয়াম ফরজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আশূরার সিয়াম ফরজ ছিল। রমজানের সিয়াম ফরজ হওয়ার পর আশূরার সিয়াম মুস্তাহাব পর্যায়ের বা ঐচ্ছিক ইবাদাত বলে গণ্য করা হয়। তা পালন না করলে কোনো গোনাহ হবে না, তবে পালন করলে রয়েছে অফুরন্ত সাওয়াব।

রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘আমি আশা করি, আশূরার সিয়াম-এর কারণে আল্লাহ পূর্ববর্তী বৎসরের কাফ্ফারা করবেন।’

অতএব বল যায়, আশূরার এ দিনে সিয়াম পালন করা অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।

মহররম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বিষাদের মাস শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয়, সমগ্র মানবজাতির কাছে।

রাসূলুল্লাহ সা.-এর ওফাতের মাত্র ৫০ বৎসর পরে ৬১ হিজরী সালের মহররম মাসের ১০ তারিখ শুক্রবার ইরাকের কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.)কে নির্মমভাবে শহিদ করা হয়।

রাসূলের প্রিয়তম দৌহিত্র হজরত হোসাইন ইবনে আলী (রা) অত্যাচারী শাসক ইয়াজিদের নিষ্ঠুর সেনাবাহিনীর হাতে তাঁর পরিবারের দুগ্ধপোষ্য্ শিশু, কিশোর ও মহিলাসহ শাহাদত বরণ করেন প্রায় ৭২ জন সাথী । জীবনের চেয়ে সত্যের শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষার জন্য নবী-দৌহিত্রের অভূতপূর্ব এ আত্মত্যাগ জগতের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।

আশুরার এ দিনে ইমাম হোসাইন (রা.) কারবালায় অন্যায়, অবিচার, স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের জন্য রণাঙ্গনে অকুতোভয় লড়াই করে শাহাদতবরণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি অসত্য, অধর্ম ও অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি।

আর এজন্য ঐতিহাসিক ১০ মহররম চিরকাল বিশ্বের নির্যাতিত, অবহেলিত এবং বঞ্চিত মানুষের প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা জোগাবে।

এভাবে পৃথিবীতে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে আশুরার দিবসে হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদত এক অনন্য, অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তীব্র গরমে সালাতুল ইসতিসকা আদায়ের কর্মসূচি জামায়াতের
ইবিতে বিবস্ত্র করে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
কুষ্টিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি
‘১০ লাখ টাকা নেন মিষ্টি খেতে, কাউরে বলব না’
X
Fresh