২০ দলীয় জোট ভাঙছে না, দাবি রিজভীর
‘বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ভাঙছে না, এক আছে। ব্যক্তি স্বার্থে দুই-এক জন চলে গেলে ২০ দলে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। বললেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
রিজভী বলেন, কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না করেই সরকারের হুকুমে আরেকটি ফরমায়েসি রায়ের দিন ধার্য করেছেন নিম্ন আদালত। যেটি সম্পূর্ণরুপে বেআইনি ও নিম্ন আদালতে সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ। অসুস্থ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য চলার বিধান পৃথিবীর দেশগুলোতে নেই। বর্তমান ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার বেআইনি খারাপ নজির সৃষ্টিকারী সরকার। তারা জিঘাংসার নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন, এটিও তার একটি।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিতে এবং মানুষকে বোবা বানিয়ে দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর এবার জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার নামে আরেকটি ভয়ঙ্কর আইন করতে যাচ্ছে সরকার। গত পরশু মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খসড়া আইনটিতে বলা হয়েছে-রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপারে বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রকাশ করলে তিন বছরের জেল ও পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা। টকশোতে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করলেও একই সাজা। নীতিমালায় আরও বলা আছে-কমিশন গঠন করে রেডিও-টেলিভিশন-অনলাইনসহ সব মিডিয়ার লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং যেকোনো কারণে তাদের লাইসেন্স তারা বাতিল করতেও পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরাচারী এই সরকার মানুষের ভোটের অধিকার ছিনতাই করে গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যা এবং গায়েবি মামলা, কবরে শায়িত লাশের বিরুদ্ধে মামলা, হাসপাতালে শায়িত অশীতিপর বৃদ্ধ ও পবিত্র হজ পালনরত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলায় বাছ-বিচারহীন গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশটাকে নৈরাজ্যে ভরিয়ে দিয়েও তারা স্বস্তি পাচ্ছে না। সে জন্য জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েও ভয়াবহ দুঃশাসন ও মহা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত রয়েছে সরকার। এই কারণে তারা সবসময় আতঙ্কে ভোগে যে, কোন সময়, কোন গণমাধ্যমে, কোন ফাঁকে তাদের মহা দুর্নীতির মহা কেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হয়ে পড়ে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ভোটারবিহীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিজেও একাধিকবার গণমাধ্যমের সামনে বলেছেন- ‘‘কিছু মিডিয়া ডকুমেন্টস তৈরি করে বসে আছে আমাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করার জন্য।’’ জনমনে প্রশ্ন, সরকার যদি এতই স্বচ্ছ হয়ে থাকে তাহলে সেই সমস্ত ডকুমেন্টের জন্য এতো শঙ্কিত কেন? দুর্নীতির খবর চেপে রেখে নিজেদেরকে নিরাপদ করার জন্যই কি মিডিয়ার মুখ বন্ধ করতে একের পর এক ভয়ঙ্কর কালো আইন করে যাচ্ছে সরকার?’
‘পুলিশ ভয়, আওয়ামী মাস্তান ভয়, মৃত্যু ভয় মুছে অমিত বিক্রমে আজ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ দম বন্ধ করা এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। বুকের পাটা শক্ত করে দেশ ও গণতন্ত্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। খুব তাড়াতাড়ি আলোককণায় উদ্ভাসিত মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তথা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনে জনমনকে স্বস্তি ও নির্ভয় করতে হবে।’
আর পড়ুন :
এসজে
মন্তব্য করুন