মাথায় বল লেগে দৃষ্টিহীন ক্রিকেটারের মৃত্যু
অনুশীলনের সময় মাথায় বল লেগে নিহত হয়েছেন ভারতের এক দৃষ্টিহীন ক্রিকেটার। দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার নবদ্বীপে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভারতের প্রভাবশালী বাংলা গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানায় জানিয়েছে, শনিবার শেষ বিকেলে নবদ্বীপ ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্র মিরাজুল মল্লিক বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলের মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। কয়েক দিন পরেই কৃষ্ণনগর হেলেন কেলার ব্লাইন্ড স্কুলের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ আছে নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের। তারই প্রস্তুতি চলছিল। যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন বল করছিল মিরাজুল। অন্য প্রান্তে ব্যাট করছিল নবম শ্রেণির পড়ুয়া সুমন ঘোষ। তার স্ট্রেট ড্রাইভ সোজা এসে লাগে নন স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা মিরাজুলের ডান কানের উপর দিকে। মুহূর্তে মাঠেই লুটিয়ে পড়ে সে। মিরাজুলকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পরে কল্যাণীর জে এন এম হাসপাতালে। সেখানে শনিবার রাত ৯.১০ মিনিটে মৃত্যু হয় তার।
ধুবুলিয়ার নতুন নোয়াপাড়ার বাসিন্দা ফজলু মল্লিকের একমাত্র ছেলে মিরাজুল ৭৫ শতাংশ দৃষ্টিহীন হলেও ছোট থেকেই ক্রিকেট পাগল। নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে আবাসিক ছাত্র হিসাবে ভর্তি হওয়ার পর থেকে শুরু হয় নিয়মিত অনুশীলন। অলরাউন্ডার হিসাবে স্কুল টিমের নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠতে বেশি দিন লাগেনি। পড়াশুনোর বাইরে তার সঙ্গী ব্যাট আর বল। কঠোর অনুশীলনে জেলা দলে নিজের জায়গা পাকা করে নেয় মিরাজুল। পরে সুযোগ পেয়েছিল রাজ্য দলে। সম্প্রতি কৃষ্ণনগরে আন্তঃজেলা ব্লাইন্ড ক্রিকেটে নদিয়াকে চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা ছিল তার।
এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুসংবাদে থমকে গিয়েছে নতুন নোয়াপাড়া। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক বাবা ফজলু মল্লিক কেরালায় কর্মরত। খবর পেয়ে ফিরে আসছেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর মা রোশনারা বেগম।
১৯৯৮ সালে ঢাকার ঘরোয়া লিগে মেহরাব হোসেন অপির একটি শট গিয়ে লেগেছিল শর্ট লেগে দাঁড়ানো আবাহনীর হয়ে খেলা ভারতীয় ক্রিকেটার রমন লাম্বার মাথায়। তিন দিন হাসপাতালে থেকে মারা যান তিনি।
এরপর ২০১৪ সালে শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে শন অ্যাবটের ভয়ংকর এক বাউন্সার মাথায় আঘাত করে হিউজের। তিনদিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই হেরে যান।
আরও পড়ুন:
ওয়াই/পি
মন্তব্য করুন