বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৩:৪৯ পিএম
ইউশা রহমানের কাব্যগ্রন্থ ‘অন্তর্লোকে অবগাহন’। এতে জায়গা করে নেওয়া কবিতাগুলোর শব্দের বুননে ফুটে ওঠে দর্শন ও অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ। মেলে আত্মঅন্বেষণ ও জীবন অন্বেষণের গভীর ধ্যানমগ্নতা। মনের অজানা গভীরতা উন্মোচনের প্রচেষ্টা, আর আত্মার অন্তর্গত রহস্য ও জীবনজটিলতা—এসব নিয়েই গড়ে উঠেছে ইউশা রহমানের কবিতার জগৎ ।
‘অন্তর্লোকে অবগাহন’ কাব্যগ্রন্থটি এক অন্তর্দর্শনের আখ্যান। ‘সাধনা-বীক্ষণ’, ‘জীবন-বীক্ষণ’, ‘কূলরেখা’, ‘জবানবন্দি’, ‘অনন্ত প্রবাহ’—এই কবিতাগুলোর প্রতিটিতে অনুভূত হয় আত্মপরিচয়ের নিরবচ্ছিন্ন খোঁজ। কবি নিজেকে খুঁজতে গিয়ে বারবার পৌঁছে গেছেন নতুন এক চেতনার দ্বারপ্রান্তে, যেখানে প্রশ্ন আরও গভীর হয়ে ওঠে। তাঁর কবিতার পংক্তিগুলো পাঠককে টেনে নিয়ে যায় মনের অতলান্তে:
“নিজেকে দেখেছি
শতরূপে-বিচিত্র-দ্বৈরথে
অন্তর্লোকের সমুদ্রতটে।”
কিছু কবিতায় নগরজীবনের বাস্তবতা, নিঃসঙ্গতা, স্মৃতি, প্রকৃতি ও প্রেমের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতায় গভীর আবেগের প্রকাশ রয়েছে। নাগরিক ব্যস্ততা ও ব্যক্তিক অনুভূতির এক চিরন্তন দ্বন্দ্ব দেখা যায় তাঁর লেখায়। একদিকে বাইরের বিশৃঙ্খল গতি, অন্যদিকে মনের নির্জনতা—এই দুইয়ের টানাপোড়েন যেন এক অবিরাম স্রোতের মতো বয়ে চলে:
“বাহিরে গতিময় ব্যস্ততার শহর,
ভেতরে ভরদুপুরের ধুধু বালুচর।”
প্রেম ও বিরহ, আশা ও হতাশা, জীবন ও অনিবার্যতার উপলব্ধি—সব মিলিয়ে ইউশা রহমানের কবিতাগুলো এক অনন্য অনুভূতির জায়গায় পৌঁছে দেয় পাঠককে। ভাবের গভীরতা তাতে স্পষ্ট। কবিতাগুলোয় জীবনের রঙ ছড়িয়ে আছে বিভিন্ন উপমা ও রূপকের মাধ্যমে। কখনো প্রকৃতি, কখনো নদী, কখনো দূরন্ত শৈশব কিংবা পথের একাকী যাত্রী হয়ে উঠে এসেছে জীবনবোধের প্রতিচিত্র।
তুমি অতিথি পাখি, যাচ্ছো ফিরে, আপন ঠিকানায় সুখ।
আমার ঠিকানা নেই, অজানায় ঘুরছি, আমিও আগন্তুক।
(দুকূলের গল্প)
“সে রেখে গেল নদী, বুকের মানচিত্রে গভীর এক রেখা।
নদীটির স্রোতে ভাসে, বেদনা আমার-নিঃসঙ্গ একা।”
(নদী ও একাকীত্ব)
বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় জাগতিক প্রকাশনের (৫৫১-৫৫২ নং) স্টলে।
আরটিভি/ ডিসিএনই