images

রাজধানী

ঈদের তৃতীয় দিন চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখলেন দেড় লাখ মানুষ

বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫ , ০৫:৪০ পিএম

images

রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঈদের তৃতীয় দিনেও দর্শনার্থীদের ভিড়। আগত দর্শনার্থীদের অধিকাংশ শিশু-কিশোর যারা অভিভাবকদের সঙ্গে এসেছেন।

বুধবার (২ এপ্রিল) হাজার হাজার মানুষের সমাগম। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী আজ প্রায় দেড় লাখ মানুষ চিড়িয়াখানায় এসেছেন।

জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, চিড়িয়াখানায় আজও ব্যাপক জনসমাগম হয়েছে। আমাদের তথ্য অনুযায়ী প্রায় দেড় লাখ দর্শনার্থী এসেছেন যা গতকালের তুলনায় কিছুটা কম। গতকাল প্রায় দুই লাখ মানুষ এসেছিলেন। মূলত ঈদের দ্বিতীয় দিনই চিড়িয়াখানায় সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় যা পরে কিছুটা কমতে থাকে।

সরেজমিনে জাতীয় চিড়িয়াখানায় দেখা যায়, চিড়িয়াখানায় অবস্থিত বিভিন্ন পশুর খাঁচার সামনে এসে তারা ভিড় করছেন। তারা অভিভাকদের কাছে পশু পাখিদের নাম জানতে চাচ্ছে। বাঘ ও সিংহের খাঁচার সামনে যাওয়ার বায়না ধরছে বাবা মার কাছে শিশুরা। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের আগ্রহ নিয়ে বিভিন্ন পশুর খাঁচার সামনে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রাণীর খাঁচার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় করতে দেখা যায়।

IMG-20250401-WA0008-b467441b0f3625228c1fc727b9e7410d

কেউ সামনে থাকা চিড়িয়াখানার ম্যাপটি বোঝার চেষ্টা করেন। পরে যে যার মতো ঘুরে ঘুরে বন্যপ্রাণী দেখেন, কেউ সবুজের মাঝে হেঁটে বেড়ান, কেউ বেঞ্চে বসে নিজেদের মধ্যে গল্প করেন। 

তবে শিশুদের মধ্যে ছিল আলাদা উচ্ছ্বাস। তারা পশুর খাঁচার সামনে দীর্ঘ সময় কাটান, অবাক চোখে পশুদের পর্যবেক্ষণ করেন। কেউ কেউ পশুদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য আওয়াজ করে ডাকার চেষ্টা করেন।

এবার চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তিনটি জেব্রা শাবক ও ১১ মাস বয়সী দুটি বাঘের শাবক দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেছে।

আগত দর্শনার্থীদের অনেকেই ঢাকার আশপাশের এলাকা সাভার, গাজীপুর থেকে এসেছেন। কেউ কেউ ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসে এখানে ঘুরতে এসেছেন। এ ছাড়া যারা এবার ঢাকায় ঈদ করছেন, তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন। আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে অনেকে একাধিকবার এসেছেন, প্রতিবারই যেন স্মৃতি রোমন্থন করেন।

চিড়িয়াখানায় বেশিরভাগ দর্শনার্থীই সপরিবারে এসেছেন। যেহেতু ছোটদের পছন্দের জায়গা তাই সবাই পরিবারসহ এসেছেন।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখানে বাঘ, ভালুক, হরিণ, সিংহ, বানর, জলহস্তী, কুমির, সাপ, ইম্পালা, গয়াল, লামা, ময়না, টিয়া, ক্যাঙারু, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ূর, উটপাখি, ইমু, শঙ্খচিল, কুড়াবাজ, তিলাবাজ, গন্ডার, হায়েনাসহ ১৩৬ প্রজাতির তিন হাজার ৩৪টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে।

IMG-20250401-WA0007-97284fc58acc080e497621c357e67573

গাজীপুর থেকে চিড়িয়াখানায় এসেছেন মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুপুর ১২ টায় চিড়িয়াখানায় এসেছি। পরিবার আর ছোট ভাইদের নিয়ে এখানে এসেছি। ঘুরছি ভালোই লাগছে কিন্তু তবে আজকেও ভিড় আছে। ভেবেছিলাম আজকে ভিড় কম হবে কিন্তু এসে দেখি ভাবনাটা পুরাই ভুল।

তিনি আরও বলেন, ছোটবেলায় যখন চিড়িয়াখানায় এসেছিলাম তখন থেকে বর্তমান অবস্থা মোটামুটি ভালো। অনেক দিন পরে আবার আসলাম চিড়িয়াখানায়।  

ফার্মগেট মনিপুর পাড়া এলাকা থেকে চিড়িয়াখানায় এসেছেন নাসিম হোসেন। তিনি বলেন, দুপুর ২টার দিকে আমার পরিবার, বন্ধু ও তার পরিবার পরিজনদের সঙ্গে করে চিড়িয়াখানায় এসেছি। বাচ্চাদের নিয়ে আমরা মোট ৭ জন এসেছি। চিড়িয়াখানায় আসা বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চারা আসলে পশুপ্রাণীগুলোকে সামনাসামনি দেখে ওরা অনেক আনন্দিত ও পরিচিত হচ্ছে। প্রাণীগুলোর প্রতি শিশুদের কৌতূহল আরও বাড়ছে। আমাদের আনন্দ বলে কিছু নেই, বাচ্চাদের আনন্দই আমাদের আনন্দ।

একদিকে চিড়িয়াখানার রাস্তায় যেমন ব্যাপক যানজট, অন্যদিকে এই সড়কের ফুটপাত প্রশস্ত হলেও অসংখ্য হকার, অস্থায়ী দোকান বসায় দর্শনার্থীদের হাঁটতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। প্রচুর মানুষ ফুটপাতে থাকায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটাও যাচ্ছিল না।

আরটিভি/এমএ/এস