বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২ , ১০:০৭ এএম
কুড়িগ্রামে বন্যায় দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসিদের। তবে জেলার নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও ধরলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে সরেজমিনে এ দৃশ্য দেখা যায়। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। একই সঙ্গে রাস্তাঘাট এখনও পানির নিচে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বুধবার (২২ জুন) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদ ও নুনখাওয়া ধরলা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে পানি ১১ সেন্টিমিটার, ধরলায় পানি ১৮ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে ব্রহ্মপুত্র চিলমারীতে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও ধরলা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্যে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৪১ হাজার ৬১২ জন মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। নাগেশ্বরী উপজেলায় ৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৬০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। একই সঙ্গে বন্যায় ৩২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দ্রুত নেমে না গেলে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে মৎস্য বিভাগ থেকে জানায়, ২৩০ দশমিক ৮৩ টন মাছ এবং ১৬.০৯ টন মাছের পোনা বানের পানিতে ভেসে গেছে। যার বিপরীতে আর্থিক ক্ষতি ২২৮.৬৯ লাখ টাকা।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের হাতিয়া গ্রামের রেনুফা বেগম জানান, ৮ দিন ধরে বাড়িতে পানি। ঘরের ভেতরে চৌকি উঁচু করে তার ওপর পরিবারের সবাইকে নিয়ে গাদাগাদি করে রাতদিন পার করছি। জমানো খাবার শেষ হয়ে গেছে। এখন খাবার নিয়েও চিন্তায় আছি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩৩৮ টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।