শনিবার, ০৬ আগস্ট ২০২২ , ০২:৩০ পিএম
গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে সারা দেশের ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনসহ জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে দেশের প্রায় প্রতিটি তেলের পাম্পে। এদিকে ঘোষণার পর থেকে নওগাঁর প্রায় অধিকাংশ জ্বালানি তেলের পাম্প রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখেন মালিকরা। অনেক ক্রেতা তেল নিতে এসে পাম্প বন্ধ থাকায় ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ করেন।
শনিবার (৬ অগাস্ট) সকালে শহরের মুক্তির মোড় শাকিব ফিলিং স্টেশনে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, তেল নিতে আসা অধিকাংশ ক্রেতা মূল্যবৃদ্ধিতে পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে যারা প্রতিদিন মোটরবাইক নিয়ে ছোটাছুটি করেন, হঠাৎ তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তেল নিতে এসে প্রয়োজনের তুলনায় কম নিতে হচ্ছে তাদের। এতে নানান অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তারা । এ ছাড়া নিয়ম বহির্ভূতভাবে পাম্প থেকে বোতলে এবং ছোট কৌটায় জ্বালানি তেল বিক্রি করতে দেখা যায় পাম্পটিতে।
সকালে তেল কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী রেজাউল ইসলাম জানান, গতকালও পেট্রোল নিয়েছি ৮৬ টাকা লিটারে এবং অকটেন নিয়েছি ৮৯ টাকা লিটার। আজ সেই পেট্রোল কিনতে হলও ১৩০ টাকা লিটার এবং অকটেন ১৩৫ টাকা লিটারে। প্রতিদিন আমার অফিস ও ব্যক্তিগত কাজে পেট্রোল ও অকটেন মিলে প্রায় ৩ থেকে ৪ লিটার জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়। এখন হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভেবে উঠতে পারছি না কী করব। তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে কিন্তু আমাদের বেতন বাড়ছে না। এমনিতেই এত মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে পরিবার নিয়ে সংসার সমলাতে হিমশিম অবস্থা, তার ওপর এই বাড়তি খরচ বেড়ে গেল। তাই ভাবছি বাইক বিক্রি করে সাইকেল কিনমু।
তেল নিতে আসা আরেক চাকরিজীবী আরিফ জানান, বাইক আর চালামু না ভাই। একটা ঠরঠরি সাইকেল কিনা চালামু। কাজের তাগিদে প্রতিদিন বাইক নিয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হয় আমাদের। এখন এমন পরিস্থিতিতে আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আগে যে সংসার মাসে ৬ হাজার টাকা দিয়ে চালাতাম, এখন তা বেড়ে ৯ হাজারে ঠেকেছে। আর যদি বর্তমান তেলের বাজারে মোটরসাইকেল চালানো হয়, তাহলে সংসার আর চলবে না। বাইকে তেল তুলেই সারা মাসের ইনকাম শেষ হয়ে যাবে।
এদিকে শাকিব ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী শামসুল হক জানান, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্তমানে ডিজেল ১১৪ টাকা ৬৫ পয়সা, পেট্রোল ১৩০ টাকা ৬৫ পয়সা এবং অকটেন ১৩৫ টাকা ৬৫ পয়সা দামে তারা বিক্রি করছেন।