images

দেশজুড়ে

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা

বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১০:২৯ এএম

images

২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স ও মায়েদের ডেলিভারী সেবা দিয়ে সুনাম কুড়াচ্ছে জয়পুরহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীরা আসছেন সেবা নিতে। তবে এই হাসপাতালটিতে রয়েছে জনবল সংঙ্কট। এছাড়া দীর্ঘদিনের পুরনো ভবন জরাজর্ণী হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্বাস্থ্যসেবা। তাই দ্রুত এই ভবনটি সংস্কারের দাবি সচেতন মহলের। 

জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে জয়পুরহাট শহরের ধানমন্ডি এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। যা জয়পুরহাট মাতৃমঙ্গল হাসপাতাল নামেও বেশ পরিচিত। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রোগীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত কয়েকমাসে এই হাসপাতালে সাড়ে তিনশতাধিক মায়ের স্বাভাবিক ডেলিভারী হয়েছে। 

চিকিৎসাসেবায় হাসপাতালটি সুনাম কুড়ালেও বর্তমান জনবল সংকটের পাশাপাশি ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। কিছু জায়গায় খুলে পড়েছে পলাস্তেরা, কোথাও দেয়াল দিয়ে বের হয়েছে গাছের শেঁকড়। বর্ষা মৌসুমে ছাদের ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে। এছাড়া জনবল কম হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফদের অনেক সময় ডাবল ডিউটি করতে হয়। এতে রোগিদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবন সংস্কারের দাবি তাদের।

আশরাফুল ইসলাম রনি নামে এক প্রসূতির স্বামী বলেন, আমার স্ত্রীকে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। মেয়ে সন্তান হয়েছে। এখানে সেবা মোটামুটি ভালো। তবে দীর্ঘদিনের পুরনো এ হাসপাতালের ভবনের অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। ভূমিকম্প হলে প্রাণের একটা ঝুঁকি থেকে যায়। সরকার হাসপাতালটি আবার নতুন করে করলে সবার জন্য ভালো হয়।

পাঁচবিবির ছাতিনালী গ্রাম থেকে আসা মোকছেদা বেগম বলেন, কয়েকবছর আগে এখানে এসেছিলাম তখন এখানকার ভবন ভালো ছিল। কিন্তু আজ এসে দেখলাম ফাটল ধরেছে। হাসপাতালে স্টাফও অনেক কম। হাসপাতালের স্টাফ বাড়ালে আরও ভালো সেবা পাওয়া যেত।

রুমি আক্তার নামে একজন বলেন, আমি আমার ছোট বোনকে এ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসার কোন টাকা দিতে হয়নি। 

হাসপাতালের স্টাফ শ্রদ্ধা ইয়াসমিন বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন সেবা নিতে। আমরা জনবল কম নিয়েও রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু হাসপাতালের ভবন অনেক পুরনো। অনেক জায়গায় ফাটল ধরায় আমরা অনেক টেনশনে থাকি, কখন ছাদ ভেঙে পড়ে।  

খালেদা বেগম নামে এক স্টাফ বলেন, আমাদের হাসপাতালে জনবল অনেক কম। এজন্য ডাবল ডিউটি করতে হয়। পর্যাপ্ত জনবল থাকলে রোগীরা আরও ভালো সেবা পাবে। পাশাপাশি ভবনের অবস্থা অনেক খারাপ। খুব ঝুঁকিপূর্ণের মাঝে আমরা আছি, যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

এ বিষয়ে জয়পুরহাট পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. কে. এম জোবায়ের গালীব বলেন, এখানে মায়েদের স্বাভাবিক প্রসবের পাশাপাশি সিজারিয়ান সেবাও দেওয়া হয়। মাতৃমৃত্যু কমিয়ে আনার লক্ষে হাসপাতালটি কাজ করে যাচ্ছে। এই হাসপাতালে পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা, জুনিয়র-সিনিয়র কনসাল্টেন্ট, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ কিছু জনবল সংকট রয়েছে। জনবল বাড়লে সেবার পরিসরটা আরও বাড়বে। এ ছাড়া নতুন করে এই হাসপাতালগুলো প্রতিটি জেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। আমাদের এই হাসপাতালও সেই তালিকায় রয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এই উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, আশা করছি আগামী ৫/৬ মাসের মধ্যে নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে।