শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ , ০৯:১৬ পিএম
মুন্সীগঞ্জে রান্নাঘরে গ্যাস লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধের মধ্যে মা সাহিদা খাতুন (৬২) মারা গেছেন।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খবরটি নিশ্চিত করেছেন নিহতের বড় ছেলে রাজিব আহম্মেদ।
তিনি জানান, মা সাহিদা খাতুনের শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। এছাড়াও অগ্নিদগ্ধে অপর আহত ছোট ভাই রিজভি আহম্মেদ রাসেল (৪৩) ১০ শতাংশ, স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩২) ১২ শতাংশ ও তাদের দুই বছর তিন মাসের শিশু সন্তান রাইয়ানের শরীরের ৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। সবার চিকিৎসা চলছে।
রাজিব জানান, তাদের সকলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার সাজাদপুর থানায়। আহত রিজভি আহম্মেদ রাসেল মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নারী ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন সেলের প্রোগ্রাম অফিসার পদে নিযুক্ত রয়েছেন। তিনি বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে নবনির্মিত একটি ভবনের ৫ তলা ফ্লাটে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
বড় ভাই রাজিব আরও জানান, রুমের দরজা, জানালা সব বন্ধই ছিলো। ভোরে বাবা রজব আলী ঘুম থেকে উঠে হাঁটতে বেরিয়ে পড়েন। আমার ধারণা, মা সকালে রান্নাঘরে যান এরপরেই হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সবাই আগুনে দগ্ধ হয়। তবে কিসে থেকে এই বিস্ফোরণ হয় তা আমরা এখনও নিশ্চিত নই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবু ইউসুফ বলেন, গ্যাস লিকেজ হয়ে বিস্ফোরণে ৪ জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে কি কারণে গ্যাস লিকেজ হয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ টিম।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচতলার ফ্লাটটিতে বিস্ফোরণে ওই রুমের সব কিছু আগুনে পুড়ে গেছে। রুমের কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙে পাশের গাছে ও দেয়ালে ঝুলে পড়ে আছে। বিস্ফোরণে ওই বিল্ডিংয়ের চার তলা ও তিন তলার রুমের সব সামনের দরজা, ভেতরের দরজা ভেঙে গেছে। এছাড়াও অনেক আসবাবপত্র ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। ফ্লাটটিতে আগুন ধরে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও স্থানীয়রা মিলে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহতদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আহত চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করেন।
উল্লেখ্য, আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে শহরের ইদ্রাকপুর এলাকার সদর উপজেলা অফিস সংলগ্ন একটি নবনির্মিত ভবনের পাঁচতলা ফ্লাটে গ্যাস লিকেজ হয়ে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।