images

দেশজুড়ে

ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোরের ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে 

বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ , ১০:৩২ পিএম

images

জুলাই বিপ্লবের শহীদ কন্যার কলেজপড়ুয়া মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোরের ডিএনএ ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণ মিলেছে। 

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ।

এ মামলায় কথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সিকেও গ্রেপ্তার রয়েছে। তবে ইমরান সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ায় তার ডিএনএ পরীক্ষা করা এখনও। ২৫ মে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তার ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য আদালতে অনুরোধ জানানো হবে। তার ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণ মিললে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকেই ধর্ষক হিসেবে সনাক্ত হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুমকী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম গত ৬ মে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।

এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত গ্রেপ্তারকৃত দুই কিশোরের ডিএনএ এবং ধর্ষণ সংক্রান্ত আলামত ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। এতে এজাহারভুক্ত দুই কিশোরের ডিএনএ সনাক্ত হলে অভিযোপত্রে তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও ডিএনএ ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি ইমরান মুন্সির আবেদন করা হবে।  

আগামী ২৫ মে আদালতে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিন ইমরানের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। আদালতের অনুমতি পেলে তার (তৃতীয় কিশোর) ডিএনএ সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হবে। বতর্মানে গ্রেপ্তার হওয়া তিন কিশোর যশোর শিশু সংশোধনাগারে আছেন জানান পুলিশের এই কর্তা ব্যক্তি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে বলা হয়, ভুক্তভোগীর বাবার বাড়ি থেকে নানা বাড়ির দূরত্ব ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার। গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে  জুলাই বিপ্লবে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে নানা বাড়ীতে ফিরছিলেন তিনি। নানা বাড়ি ফেরার পথে কলেজের ঘনিষ্ঠ সহপাঠীর সঙ্গে দেখা হয়। তখন ওই সহপাঠী তাকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাগানে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন।এ সময় দুই কিশোর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধর্ষণের দৃশ্য দেখে তা ফাঁস করে দেয়ার  ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে তাকে। এজাহারভুক্ত দুই কিশোরের মুখ বন্ধ রাখতে ধর্ষণ করতে সহায়তা করে ওই সহপাঠী প্রেমিক ইমরান মুন্সি। ধর্ষণের মধ্য ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র করে তার নগ্ন ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে মামলার এজাহারভুক্ত দুই কিশোর। ধর্ষণ শেষে মোবাইলে ধারণ করা নগ্ন ভিডিও চিত্র দিয়ে পর্নগ্রাফি তৈরির কথা বলা হয় ভুক্তভোগী মেয়েটিকে। 

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, প্রথম দিকে গ্রেপ্তার হওয়া দুই কিশোরে ডিএনএ এবং সংগৃহীত আলামত ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হলে তারা সনাক্ত হয়। কিন্তু তদন্তকালে ধর্ষণস্থলে আলামত হিসেবে সংগৃহীত গাছের কয়েকটি পতিত পাতায় পাওয়া ডিএনএ ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হলে এজাহার ভুক্ত আসামী ছাড়াও কথিত প্রেমিক ইমরান মুন্সির ডিএনএ শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে এজাহারভুক্ত এক আসামি পুলিশের জিজ্ঞাবাদ ও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয় ইমরান মুন্সি জড়িত থাকার বিষয়টি।

এ কারণে এজাহারভুক্ত ছাড়াও তদন্তে পাওয়া ইমরানকে অভিযোগপত্রে সম্পৃক্ত করা হয়। 

প্রসঙ্গত, জুলাই বিপ্লবে ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মেয়েটির বাবা। পেশায় সে একজন গাড়ী চালক ( ড্রাইভার) ছিলেন। এরপর তাকে তার গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামে নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজপড়ুয়া মেয়েটি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে দুই কিশোরের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এরপর গত ২৬ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মেয়েটি ২৭ এপ্রিল তার শহীদ বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। শহীদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। বর্তমানে স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।

আরটিভি/এএএ