images

দেশজুড়ে

হাতিয়ায় সি-ট্রাক বন্ধ করতে তৎপর সিন্ডিকেট, মাস্টারের ওপর হামলা

শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ , ০২:৩৯ পিএম

images

যাত্রীদের কাছে টিকেট বিক্রিতে বাধা দেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ঘাট ছেড়ে যেতে বাধ্য করা, অনেক সময় যাত্রী উঠতে বাধা দেওয়া সহ যাত্রীবাহী সি-ট্রাক চলাচলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায়। এসব ঘটনায় সরাসরি ট্রলার মালিক সিন্ডিকেট জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি চেয়ারম্যানঘাট–নলচিরা রুটে চলাচলকারী এসটি শৈবাল সি-ট্রাকের মাস্টার ও স্টাফের ওপর হামলার ঘটনায় একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় প্রচার হলে আলোচনায় আসে বিষয়টি। ভিডিওতে দেখা যায় কয়েকজন সি-ট্রাকের মাস্টার ও স্টাফদের দিকে তেড়ে আসছেন। তারা দ্রুত সি-ট্রাক ছেড়ে যেতে গালমন্দ করছেন।

৫ আগস্টের পর হাতিয়ায় ঘাট ও যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থাপনা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সবকিছু। ইজারাদার গা ঢাকা দেওয়ায় যে যার মতো করে ফিটনেসবিহীন ট্রলারে যাত্রী পারাপার করতে থাকেন ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রশাসনের তদারকি না থাকায় বিশাল এক সিন্ডিকেট তৈরি হয়। তারা ফিটনেসবিহীন ট্রলার স্পিডবোটসহ বিভিন্ন যানবাহন পরিচালনা করে আসছেন। 

এদিকে বর্ষা মৌসুমের কথা চিন্তা করে সরকারি সি-ট্রাকটি চলাচলের ব্যবস্থা করেন প্রশাসন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সি-ট্রাক চলাচলে বাধা দেওয়া শুরু করে এ সিন্ডিকেট। সম্প্রতি চেয়ারম্যানঘাটে সি-ট্রাকের যাত্রীদের টিকেট কাউন্টারটিও বন্ধ করে দেয় তারা। এ ধরনের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায় জামশেদ নামের এক ব্যক্তি টিকেট কাউন্টারে গিয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তিদের বের করে দেয়। টেবিলের ওপর রাখা টিকেটের বান্ডিল ছিঁড়ে ফেলেন। পরে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে নৌবাহিনী চেয়ারম্যানঘাট গিয়ে একজনকে আটক করেন। 

এর কিছুদিন পর সংঘবদ্ধ দল চেয়ারম্যানঘাটে সি-ট্রাকে যাত্রী উঠতে বাধা দিতে দেখা যায়। তারা সি-ট্রাকের মূল প্রবেশদ্বার সিঁড়ির গোঁড়ায় দাঁড়িয়ে যাত্রীদের অন্য যানবাহনে উঠতে বাধ্য করেন। এতে যাত্রীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। অনেক যাত্রীর সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। 

এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, শীত মৌসুমে সি-ট্রাক ছাড়াও অন্যান্য বাহনে নদী পার হওয়া যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে দ্বীপের সাত লাখ মানুষের নদী পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা হল এ সি-ট্রাক। কারণ তখন নদী উত্তাল থাকে। অন্য যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি থাকে। যেকোনো মূল্যে আমাদেরকে সি-ট্রাক চলাচল ঠিক রাখতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবেন বলে আশা করছি। 

এ বিষয়ে এস টি শৈবাল সি-ট্রাক মাস্টার আফজাল হোসেন বলেন, সম্প্রতি সাইফুল ও তার সহযোগী আলমগীর ঘটনার দিন সি-ট্রাক ছাড়ার সময় ৮ টায় থাকলেও সাড়ে ৭টায় থেকে আমাদেরকে সি-ট্রাক ছেড়ে দেওয়ার জন্য গালিগালাজ শুরু করে। সি-ট্রাকের রশি খুলে না দেওয়ায় স্টাফকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। পরিস্থিতির এক পর্যায়ে তারা আমার ওপর তেড়ে আসে গালমন্দ করে। পরে ৭টা ৪০ মিনিটে সি-ট্রাক ছেড়ে আসতে বাধ্য হই। বিষয়টি আমি প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তারা মূলত সি-ট্রাকে যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখে অবৈধভাবে ট্রলারে যাত্রী পারাপারের সুবিধা নিতে এসব করছে। 

আরটিভি/এএএ/এস